ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতিমন্ত্রীর মহাস্থানগড় পরিদর্শন

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সংস্কৃতিমন্ত্রীর মহাস্থানগড় পরিদর্শন

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ এ বছর ডিসেম্বরে বগুড়ার মহাস্থানগড়ে অনুষ্ঠিতব্য ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব হারমোনির (আইএফএইচ) স্থান নির্বাচন এবং আয়োজনের প্রস্ততি ও ব্যবস্থাপনার দিক নির্দেশনা দিতে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর রবিবার সকালে বগুড়ার মহাস্থানগড় পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, এই আয়োজন বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন আরও সুদৃঢ় করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহেই এই বড় অনুষ্ঠান বগুড়ার মহাস্থানগড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা তাকে (আসাদুজ্জামান নূর) বলেছেন, তিনি যে ‘কমিটমেন্ট’ করেছেন তা পালন করবেন। এই আয়োজনের মূল উৎসব বগুড়ার মহাস্থানগড়ে। তবে উৎসবের ওপর ভিত্তি করে মোট ১৬ জেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। জেলাগুলো: নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, খুলনা, রংপুর, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, বরিশাল, পটুয়াখালি, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ। এসব জেলাতেও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের আয়োজন করা হবে। পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ইব্রাহিম হোসেন, প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক আলতাফ হোসেন, বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী, জেলা কালচারাল অফিসার সাগর বসাক,বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক, বগুড়া থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ বছর ডিসেম্বরে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন নগরী মহাস্থানগড়ে সম্প্রীতির ঐকতানের আন্তর্জাতিক উৎসব (ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব হারমোনি) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই উৎসবের ওপর ভিত্তি করে ১৬ জেলায় এমন অনুষ্ঠান হবে। এ ধরনের অনুষ্ঠান দেশে এই প্রথম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাস্থানগড়ে এসে এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এই আয়োজনে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করা হয়েছে আমন্ত্রিত সকল দেশই ফেস্টিভ্যালে যোগ দেবে। মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর তার সফর সঙ্গীদের নিয়ে হেলিকপ্টারযোগে বেলা ১১ টায় মহাস্থানগড়ের বৈরাগীরভিটায় হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। তারপর তিনি মহাস্থানগড়ের পুরো এলাকা, প্রতœতত্ত্ব জাদুঘরের কাছে গোবিন্দভিটা এবং মহাস্থানগড়কে নতুনভাবে সাজানোর স্থানগুলো পরিদর্শন করেন। এ সময় প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় মন্ত্রীকে মহাস্থানগড়ের ঐতিহাসিক পটভূমি ব্যাখ্যা করেন এবং প্রাপ্ত প্রতœ নিদর্শনের ছবি দেখান। মন্ত্রী উৎসবে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধি এবং পর্যটকদের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিষয়ে আলোকপাত করে আয়োজনের স্থান পরিদর্শন করেন। তিনি বিদেশীদের আগমনে আবাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন। মহাস্থানগড়ে টুরিস্ট পুলিশ স্থাপনের বিষয়টিও প্রাধান্য পায়। মন্ত্রী পরিদর্শনের সময় আদিবাসীরা নৃত্য পরিবেশন করে। মন্ত্রী ঐতিহ্যের দুটি স্টল পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, এ বছর বগুড়ার মহাস্থানগড় এক বছরের জন্য সার্ক কালচারাল সিটির স্বীকৃতি পায়। সার্কভুক্ত একটি দেশের অসহযোগিতার কারণে আয়োজনে ভাটা পড়ে। তবে সার্ক কালচারাল সেন্টারের তালিকায় বগুড়ার মহাস্থানগড় এক বছরের জন্য কালচারাল সিটি হিসেবেই আছে। যে কোন সময় এই আয়োজন শুরু হবে। সার্ক কালচারাল সিটির অনুষ্ঠানমালার সঙ্গে একটি সাংস্কৃতিক কর্মকা- আছে। তারই আলোকে ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল আব হারমোনির সঙ্গে বড় ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের আয়োজন হতে যাচ্ছে। সূত্র জানায়, এই আন্তর্জাতিক আয়োজন বিশ্বের দেশগুলোর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে ব্যাপক পরিচিতি দেবে। এদিকে উৎসবকে সফল করতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় লিয়াজোঁ কমিটি, নিরাপত্তা বিষয়ক উপকমিটিসহ কয়েকটি কমিটি গঠন করেছে। উল্লেখ্য বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহযোগিতায় মহাস্থানগড়কে দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে। মহাস্থানগড়ের স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় ঝলমলে করে তুলে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রাচীন ইতিহাসের পটভূমি তুলে ধরা হবে। বিদেশীদের কাছে বাঙালীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে। বিদেশীরা তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড- সফলতার সঙ্গে তুলে ধরে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্প্রীতির মেলবন্ধনে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে, এমনটি আশা করা হয়েছে। এই উৎসবে বগুড়াসহ বাংলাদেশের সকল অঞ্চলের সাংস্কৃতিক কর্মকা- উপস্থাপিত হবে।
×