ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এএসআইর বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে শিক্ষার্থীর অনশন

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এএসআইর বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে শিক্ষার্থীর অনশন

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ১৬ সেপ্টেম্বর ॥ আরিফুজ্জামান সোহাগ নামে পুলিশের এএসআই’র বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে আমরন অনশন করছে মাস্টার্স পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। শুক্রবার বিকেল থেকে সদর উপজেলার পূর্ব আলিনাপাড়ায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী আন্ধারিয়া গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ও শেরপুর সরকারী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ওই শিক্ষার্থী। বিষয়টি পুলিশের আইজিসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিতভাবে জানানো হলেও শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশের তরফ থেকে শুরু হয়নি কোন তৎপরতা, স্থানীয়ভাবেও হয়নি কোন সুরাহা। এ নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক তোলপাড়। জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার পূর্ব আলিনাপাড়া খালপাড় এলাকার বাসিন্দা ও পুলিশের এসবি শাখায় কর্মরত এএসআই আরিফুজ্জামান সোহাগের (বিপি-৮৮০৭১২৮৭৪৭) ২০১৬ সালের দিকে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর ওই শিক্ষার্থীকে টাঙ্গাইলে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে এএসআই সোহাগ গোপনে বিয়ে করে। ওই সময় শিক্ষার্থীকে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়, সোহাগের ছোট বোনের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে। ওই শিক্ষার্থী শর্ত নিলে গোপনেই চলে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মেলামেশা। কোন কোন সময় ওই শিক্ষার্থীর শহরের নবীনগরের বাসায় বাবা-মা না থাকলে সে সুযোগে সোহাগ বাসায় গিয়ে মেলামেশা করত এবং বিভিন্ন স্থানে স্ত্রী হিসেবে বেড়াতে নিয়ে যেত। সম্প্রতি ওই শিক্ষার্থীর বিয়ের প্রস্তাব এলে সে সোহাগকে তাদের বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করতে বললে এবং শর্তানুযায়ী স্ত্রী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে বললে সে মোবাইলে অস্বীকৃতি জানিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ এসএমএস পাঠায়। পাশাপাশি নকলা শহরে নতুন করে বিয়ে করার জন্য মেয়ে দেখে এবং বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করে সোহাগ। খবর পেয়ে শিক্ষার্থী মোবাইলের মাধ্যমে সোহাগকে বোঝালে সে তা না মেনে বরং বিয়ের নির্ধারিত তারিখের আগেই গোপনে শুক্রবার বিয়ের তারিখ ঠিক করে। বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিক্ষার্থী পুলিশের আইজি, অতিরিক্ত আইজি ও ডিআইজি বরাবর দ্রুত লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করে। এরই মধ্যে সোহাগ বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে আসেন। সেই সংবাদটিও ওই শিক্ষার্থী পেয়ে যায় এবং সশরীরে বিয়েবাড়িতে হাজির হয়ে আগের বিয়ের বিষয়টি কন্যা পক্ষকে জানায়। ওই সুযোগে সোহাগ সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বিয়েবাড়ি থেকে চম্পট দেয়। অন্যদিকে সোহাগকে না পেয়ে শুক্রবার বিকেলে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে ওই শিক্ষার্থী এএসআই সোহাগের বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করে। শনিবার বিকেলে সরেজমিনে গেলে অনশনে থাকা ওই শিক্ষার্থী এএসআই সোহাগের সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেন। ওই বিষয়ে বক্তব্য জানতে এএসআই সোহাগকে বাড়ির আশপাশেও পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বাড়িতে থাকা সোহাগের চাচা মঞ্জু মিয়া জানান, উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণের অভাবে আমরা এখনই ওই মেয়েকে মেনে নিতে পারছি না। এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। তবে সদর ওসিকে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।
×