ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উৎপাদন বাড়লেও সঠিক ভ্যাট দিচ্ছে না অনেক প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

উৎপাদন বাড়লেও সঠিক ভ্যাট দিচ্ছে না অনেক প্রতিষ্ঠান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের শীর্ষ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট পরিশোধের হার কমে গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ও বিপণন বাড়লেও সঠিক হারে ভ্যাট দিচ্ছে না। সম্প্রতি এমন কিছু প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে তালিকা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) শাখা। তালিকায় বেশকিছু বহুজাতিক কোম্পানি, দেশের বেসরকারী ব্যাংক, ওষুধ কোম্পানি, গ্যাস ফিল্ড। এছাড়া নিরীক্ষা তালিকায় রয়েছে সরকারী প্রতিষ্ঠানও। সূত্র জানায়, বিগত পাঁচ বছর কোন্ প্রতিষ্ঠান কী পরিমাণ ভ্যাট প্রদান করেছে, কোন্ কোন্ উৎস থেকে ভ্যাট দিয়েছে তা নিরীক্ষা করা হবে। তবে পূর্ববর্তী নিরীক্ষা সময় হতে হালনাগাদ সময় পর্যন্ত নিরীক্ষা করা হবে। এনবিঅরের সূত্র জানায়, শীর্ষ পর্যায়ের ৩৯টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে এসব প্রতিষ্ঠানের পাঁচ বছরের ভ্যাট প্রদান প্রক্রিয়া নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলটিইউ। আগামী সপ্তাহে এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রক্রিয়া, মজুদ পণ্য ও সেবা, উপকরণ পরিদর্শন, মূসক পুস্তক, বাণিজ্যিক দলিল, হিসাব ও নথিপত্র, ব্যাংক লেনদেন, অডিট রিপোর্টসহ নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিতে এলটিইউ থেকে চিঠি দেয়া হবে। চিঠি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় এসব তথ্যা এলটিইউতে জমা দিতে হবে। জানা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা খতিয়ে দেখতে দুজন সহকারী কমিশনার ও চারজন উপ-কমিশনারের নেতৃত্বে ছয়টি টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে। এ টিমের তত্ত্বাবধান করবেন এলটিইউ’র অতিরিক্ত কমিশনার। এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, কর্মকর্তাদের অতীত অভিজ্ঞতা, মেধা ও ক্ষেত্রবিশেষ পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এনে তালিকায় স্থান পাওয়া প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আমদানি-রফতানি, স্থানীয় ক্রয়সংক্রান্ত হিসাবের কাগজপত্র, প্রাসঙ্গিক দলিল, আয়কর বিভাগসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আড়াআড়িভাবে যাচাইপূর্বক সম্ভাব্য ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক পরিহার করে বছরভিত্তিক ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করা হবে। ক্ষেত্রবিশেষ এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) থেকে আমদানি-রফতানির তথ্য সংগ্রহ করে আড়াআড়িভাবে যাচাই করে মূসক বা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে কি-না তা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমদানির তথ্য কাস্টম হাউস বা শুল্ক স্টেশন থেকে সংগ্রহ করা হবে। নিরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন কর্মকর্তারা। কোন প্রতিষ্ঠানের গৃহীত রেয়াতের অনুপাতে উপকরণের মজুদ রয়েছে কি-না কায়িক পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হবে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন ৩০ কার্যদিবস বা এক মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে। সূত্র জানায়, তালিকায় স্থান পাওয়া কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি, বেসরকারী ব্যাংক এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এর আগে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে এনবিআর। এছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সময় ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করা হয়েছে। এ বিষয়ে এলটিইউ’র একজন কর্মকর্তা বলেন, আগামী সপ্তাহে তালিকা অনুযায়ী কোম্পানিগুলোকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেয়া হবে। কাগজপত্র পেলে টিম কাজ শুরু করবে। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী নিরীক্ষায় ভ্যাট ফাঁকি পাওয়া যাবে।
×