ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আকাশ সীমা লঙ্ঘন

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ফের কড়া প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ফের কড়া প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা নিধন ও তাদের দেশ ত্যাগে বাধ্য করাসহ বাংলাদেশের আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে কয়েক দিন পর পর দেশের ভেতরে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও ড্রোন ঢুকে যাওয়ার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে প্রতিবাদটি শুক্রবার সন্ধ্যায় জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জাননো হয়, ঢাকায় মিয়ানমারের শার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স অং মিন্টকে শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালকের দফতরে ডেকে একটি প্রতিবাদলিপি দেয়া হয়েছে। গত ১০, ১২ ও ১৪ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের ড্রোন ও হেলিকপ্টার বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের শার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স অং মিন্টকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। ২৫ আগস্টের পর থেকে দফায় দফায় আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকা-ের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ওই প্রতিবাদে। একই সঙ্গে এ ধরনের আচরণ বন্ধের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারের প্রতি জোরালো দাবি জানানো হয় বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মিয়ানমারকে সতর্ক করে বাংলাদেশ বলেছে, তাদের এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকা- ‘অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি’ ডেকে আনতে পারে। গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল নামে। জাতিসংঘের হিসাবে এ পর্যন্ত চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এ সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছতে পারে। এই উত্তেজনার মধ্যে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার গত ১ সেপ্টেম্বর তিন দফা বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথম প্রতিবাদ জানায়। এর পরেও বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর আকাশযান বাংলাদেশের আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছে, যার ছবি সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে জড়ো হওয়া রোহিঙ্গাদের দিকে গুলি ছোড়ার পাশাপাশি সীমান্তের নিজেদের অংশে ভূমি মাইনও পুঁতেছে মিয়ানমার। গত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ওপারে স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুইজন নিহত হয়েছেন। এদের একজন বাংলাদেশী নাগরিক। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব দিয়ে নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। রোহিঙ্গা সঙ্কটের মধ্যেই ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণ তুলে ধরে তা নিরসনের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তাব তুলে ধরবে। এমন কথা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
×