ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জ্যাকি ওয়াটেলস;###; সিএনএন

কম্পিউটার চালু হলো ওরিয়ন নভোযানে

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কম্পিউটার চালু হলো ওরিয়ন নভোযানে

আমেরিকার সর্বাধুনিক নভোযান ‘ওরিয়ন’ যা নভোচারীদের চাঁদে, মঙ্গলগ্রহে এমনকি সেগুলোকে ছাড়িয়ে মহাশূন্যের গহীনে নিয়ে যাবে সম্প্রতি সেটি নির্মাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করেছে। ক’দিন আগে প্রথমবারের মতো এতে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে এবং তার ফলে সচল হয়ে উঠেছে এর জটিল কম্পিউটার ব্যবস্থা কম্পিউটারই হলো নভোযানের মস্তিষ্ক ও হৃৎপি- যা ওরিয়নকে মহাশূন্য দিয়ে চলার দিকনির্দেশনা দেবে ও পথ দেখাবে। ওরিয়নে বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার কাজটা করেছে এই প্রকল্পে নাসার ঠিকাদারি কোম্পানি লকহীড মার্টিন (এলএমটি) কোম্পানির এক মুখপাত্র জানান যে প্রারম্ভিক বিদ্যুত সংযোগের কাজটা খুব ভালভাবেই হয়েছে। আগামী দুই এক মাস নাসা ওরিয়নে আরও কিছু কম্পিউটার বসাবে এবং এর হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার পরীক্ষার কাজ চালিয়ে যাবে। ২০১১ সালে স্পেস শ্যাটল বা নভো খেয়া কর্মসূচীকে অবসর দেয়ার পর থেকে নাসা এই ওরিয়ন নিয়ে কাজ চালিয়ে আসছে। নাসা আশা করে এক দিন স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস) নামে এক বিশাল রকেটে করে ওরিয়নকে মহাশূন্য অভিযানে পাঠাতে পারবে। সেই এসএলএস রকেট ও নাসা এবং কিছু প্রাইভেট সেক্টরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিলে তৈরি করছে। নির্মাণ শেষে রকেটটি চালু হলে সেটি হবে এ যাবতকালের নির্মিত সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট। বর্তমান রেকর্ডটির ধারক নাসার স্যাটার্ন ভি রকেট যা ১৯৬৯ সালে চন্দ্রে অবতরণ অভিযানসহ নাসার এ্যাপোলো মিশনগুলোতে ব্যবহৃত হয়েছিল এবং অনেক আগেই এগুলোর ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। ওরিয়ন ও এসএলএসকে সামনের দিকে নাসার পরবর্তী বিশাল পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আপাতত একটা পরিকল্পনা আছে যে ২০১৯ সালে ওরিয়নকে একটা পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে চাঁদের চারপাশে ঘুরিয়ে আনা হবে সেই ফ্লাইটে কোন মানুষ থাকবে না এবং নভোযানটি পাঠানো হবে এসএলএসে করে তবে নভোচারী না থাকলেও এর প্রযুক্তির সিংহভাগ হবে সেই একই রকমের যখন নভোচারীরা পরবর্তীকালে এই ক্যাপসুলে করে সৌরজগতের অন্যান্য স্থানে যাবেন। তবে মানুষ প্রথম কখন ওরিয়নে করে মহাশূন্য যাত্রা করবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। গোড়াতে নাসা বলেছিল যে প্রথম মানববাহী মিশন পরিচালিত হবে ২০২১ সালের কোন এক সময়। তবে সেই সময়টা বদলানো হয়েছে যদিও নতুন তারিখটা এখনও ঘোষণা করা হয়নি। সমালোচকরা বলেন, আমেরিকার বাণিজ্যিক মহাকাশ শিল্পের যেমন দ্রুত উন্নতি ঘটেছে তার আলোকে দেখলে ওরিয়ন ও এসএলএসের নির্মাণ বড় ধীরগতিতে হচ্ছে এবং বেশ ব্যয়বহুলও বটে। বেসরকারী খাতের বেশকিছু কোম্পানি মহাকাশ অভিযান ও গবেষণায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে। এলোন মুস্কের স্পেস এক্স মঙ্গলগ্রহ অভিযান পরিকল্পনার জন্য পরিচিত। কোম্পানিটি তার মঙ্গল অভিযান পরিকল্পনার বড় ধরনের আপডেট শীঘ্রই ঘোষণা করবে। ‘ব্লু অরিজিন’ কোম্পানির প্রধান জেফ বেজোসও তার নিজস্ব নভোযান তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন যেটি মালপত্র নিয়ে চাঁদে যেতে পারবে। এদিকে নাসা ওরিয়ন ও এসএলএস তৈরির পেছনে শত শত কোটি ডলার ঢেলেছে এবং বেশ কিছু ডেডলাইন ইতোমধ্যেই মিস করেছে। তবে নাসার ওরিয়ন কর্মসচীর উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন যে এসএলএস ও ওরিয়নের সক্ষমতা আছে এমন কিছু তৈরি করার ক্ষেত্রে বেসরকারী খাত এখনও নাসার অনেক পেছনে পড়ে আছে। নাসাই প্রথম চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছে। কাজেই এই সংস্থাটি মহাকাশ যাত্রার সমস্যা ও জটিলতা সম্পর্কে দু-একটা জিনিস জানে। লকহীডে ওরিয়নের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাইক হাউয়েস এক বিবৃতিতে বলেন, টিমের সবাই জানেন এই পরীক্ষামূলক অভিযান কত গুরুত্বপূর্ণ এবং তার চেয়েও বড় কথা মানুষের ভবিষ্যত মহামাশ যাত্রায় এই নভোযান এবং এই মিশনটি কি তাৎপর্য বহন করে।
×