ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাতক্ষীরায় ভারতীয় নারীকে ধর্ষণেরঅভিযোগ

আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনেরবিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনেরবিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ এক ভারতীয় নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নির্যাতিত নারীর শাশুড়ি বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন কলারোয়া উপজেলার যুগিখালি ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল হাসান ও তার চার সহযোগী সোহাগ হোসেন, সোহাগ দফাদার, আসাদুজ্জামান ও কদম আলি। বিচারক আশরাফুল ইসলাম মামলাটি এজাহারভুক্ত করে তদন্তপূর্বক পুলিশ প্রতিবেদন দেয়ার জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তার ছেলে ভারতের পশ্চিমবাংলায় দিনমজুরের কাজ করতে গিয়ে কিছুদিন আগে বিথারী গ্রামের এক নারীকে বাংলাদেশে এনে বিয়ে করে। এ ব্যাপারে তার কাছে আদালতের এফিডেভিটও রয়েছে। ঘর-সংসার করার এক পর্যায়ে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসান তার ছেলের বউকে নানাভাবে বিরক্ত করতেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম আফজালের বাড়িতে গিয়ে বাজারে পুলিশ এসেছে জানিয়ে তার ছেলে ও পুত্রবধূকে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসের দোতলায় নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাদের কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করে আফজালকে তিনি বলেন, তোমার বউ ভারতীয় নাগরিক। এখানে থাকতে চাইলে পুলিশকে এই টাকা দিতে হবে। অন্যথায় পুলিশ তোমার বউকে গ্রেফতার করবে। আরজিতে আরও বলা হয়, এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে চেয়ারম্যান থানার ওসির সঙ্গে কথা বলানোর নাম করে ওই রাতেই গৃহবধূকে নিয়ে যান। পরে তাকে থানায় না নিয়ে তোলা হয় কলারোয়ার ঝিকরা গ্রামের সঞ্জয়ের বাড়িতে। অভিযোগে বলা হয়, ওই বাড়ির একটি কক্ষে ভারতীয় নারীকে আটকে রেখে প্রথমে চেয়ারম্যান রবিউল হাসান ও পরে পর্যায়ক্রমে তার সহযোগী সোহাগ হোসেন, সোহাগ দফাদার, আসাদুজ্জামান ও কদম আলি ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। পরে আহত নারীকে গভীর রাতে চেয়ারম্যান রবিউল হাসান চৌকিদার এমাদুলের মাধ্যমে বাড়িতে পৌঁছে দেন। ভোরে গৃহবধূর শাশুড়ি ঘুম থেকে উঠে বাড়ির মধ্যে নিজের ছেলের বউকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।মামলায় তিনি আরও বলেন, সকালে বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে থানায় খবর দেয়া হয়। পুলিশের নির্দেশ অনুযায়ী তাকে প্রথমে কলারোয়া হাসপাতাল ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সুস্থ হয়ে কলারোয়া থানায় মামলা করা হলে পুলিশ তা রেকর্ড না করে ফেরত দেয়। বাধ্য হয়ে গৃহবধূর শাশুড়ি সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান রবিউল হাসান সাংবাদিকদের জানান, ভারতীয় ওই মেয়েটিকে আমার ইউনিয়নে নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। এই নিয়ে সালিসও হয়েছিল। হঠাৎ তিনি জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। চেয়ারম্যান আরও বলেন, এ মামলার ঘটনায় তার নিজ দলের প্রতিপক্ষরাও আগ্রহী আছে বলে তিনি মনে করেন।
×