ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গলাচিপায় ৪ বছর ঝুলছে ভবন নির্মাণ ॥ দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

গলাচিপায় ৪ বছর ঝুলছে ভবন নির্মাণ ॥ দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ গলাচিপা জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ চার বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে। শ্রেণীকক্ষের অভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে ভবন নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এতে করে ভবনের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে। এক কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দোতলা ভবনটি নির্মাণ করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। এক বছরের মধ্যে নির্মাণ শেষে ভবন হস্তান্তরের নির্দেশনা থাকলেও এরই মধ্যে চার বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু ভবন নির্মাণ কাজ আজও শেষ হয়নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, ঠিকাদার স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় শুরু থেকে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনের ডিজাইন, কার্যাদেশ ও বরাদ্দ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেয়ার বিধান থাকলেও ঠিকাদার সেগুলো সরবরাহ করেননি। নির্মাণাধীন ভবনের দোতলায় বছরাধিক সময় ধরে স্তূপিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকা সিমেন্ট দেখিয়ে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, মেয়াদোত্তীর্ণ সিমেন্ট দিয়েই এভাবে পুরো ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যবহার হয়েছে মরিচা ধরে যাওয়া রড। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ নাসিরউদ্দিন নেছার অভিযোগ করেন, ভবনের ফ্লোরে ফাটল ধরেছে। সিঁড়ি মোজাইক করা হয়নি। দেয়ালের অনেক জায়গার পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদের পানি নিষ্কাশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দেয়া হয়নি। যে কারণে ছাদে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে আছে। বিমেও ফাটল ধরেছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, নিম্নমানের বিদ্যুত সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে। সোলার সিস্টেম চালু হয়নি। পানির লাইন অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের পটুয়াখালী জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামানের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদকের টেকনিক্যাল জ্ঞান নেই দাবি করে বলেন, ভবন নির্মাণে কোন ধরনের দুর্নীতি হয়নি। বর্তমানে মাত্র ১৫ দিনের কাজ বাকি আছে। যা শীঘ্রই শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে নোটিস করা হচ্ছে ভবন নির্মাণ কাজের তদারককারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হাদিউজ্জামান খানও একই ভাবে বলেন, যারা দুর্নীতির অভিযোগ করছে, তারা টেকনিক্যাল বিষয় বোঝেন না। ঠিকাদার রেনু আক্তার জানান, শিক্ষা প্রকৌশল দফতরে যথাসময়ে বিল পাওয়া যায় না বলে ভবন নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে।
×