ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ১৫ দেশে খালেদার চিঠি

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ১৫ দেশে খালেদার চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৫ সদস্য দেশে চিঠি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বিএনপি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ, মৌলিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত এবং নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ১৫ দেশের সহযোগিতা চেয়েছেন খালেদা জিয়া। এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ওপর সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া। এ ছাড়া ওআইসিভুক্ত প্রতিটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাছেও একই চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। ১২ সেপ্টেম্বর পাঠানো চিঠিতে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ৫ দফার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন খালেদা জিয়া। চিঠিতে খালেদা জিয়া রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে যে ৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছেন তা হলো ১) মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বাস্তব অবস্থা নির্ধারণের জন্য জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা গঠন করতে হবে। যদি প্রয়োজন পড়ে জাতিসংঘের অধীনে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ২) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জরুরী সহায়তা হিসেবে যেসব ত্রাণ পায় এর ওপর থেকে সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নিতে মিয়ানমার সরকারকে তাগিদ দিতে হবে। ৩) রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং রাখাইন রাজ্য পর্যবেক্ষণ করতে সাংবাদিক ও মানবাধিকার বিষয়ক পর্যবেক্ষকদের প্রবেশের অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারকে বলতে হবে। ৪) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় ও ত্রাণ সহায়তা এবং তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের সকল প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে হবে। ৫) রোহিঙ্গাদের মৌলিক ও মানবিক মর্যাদা এবং শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে তাদের রাষ্ট্রহীন অবস্থার ইতি ঘটাতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে জাতিসংঘের প্রতিও তাগিদ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। চিঠিতে তিনি অর্ধশতাধিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বলেছেন, আপনি ও আপনার সরকারের উচিত জাতিসংঘের কাছে (সাধারণ অধিবেশন বা নিরাপত্তা পরিষদ, যেখানেই উচিত মনে হয়) বিষয়টি তুলে ধরা। চিঠিতে খালেদা জিয়া আরও বলেছেন, এ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেটের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে এটা অবশ্যই বুঝতে হবে যে, এগুলো হচ্ছে সময়সাপেক্ষ লক্ষ্য। কিন্তু এই মুহূর্তে সেখানে রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষায় জরুরী ভিত্তিতে এবং অবিলম্বে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও জোরালো ভাষায় এবং সমস্বরে কথা বলার সময় এটা। খালেদা জিয়া বলেন, আমরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের নিষ্ক্রিয় প্রত্যক্ষদর্শী হতে পারি না। আমাদের দ্ব্যর্থহীনভাবে পক্ষ বেছে নিতে হবে। এই বিষয়টি পরিষ্কারভাবে মনে রাখতে হবে, বিশ্বের কোন স্থানেই মানবাধিকারের বিরুদ্ধে নৃশংসতা সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে, মিয়ানমারে একটি জাতিগত নির্মূলের লক্ষ্যে সম্ভাব্য গণহত্যার মাধ্যমে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভূমি থেকে চিরতরে নির্মূলের লক্ষ্যে এ অপরাধ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
×