ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডিসেম্বরে মহাস্থানগড়ে সম্প্রীতির ঐকতানের আন্তর্জাতিক উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ডিসেম্বরে মহাস্থানগড়ে সম্প্রীতির ঐকতানের আন্তর্জাতিক উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ এ বছর শেষে ডিসেম্বরে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন নগরী বগুড়ার মহাস্থানগড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সম্প্রীতির ঐকতানের আন্তর্জাতিক উৎসব (ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব হারমোনি)। আয়োজক- সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অংশগ্রহণ করবে বিশ্বের অন্তত ৫০ দেশের প্রতিনিধিদল। ইতোমধ্যে উৎসব সফল করে তুলতে ঢাকায় কয়েকদফা বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার ঢাকায় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক সকল অধিদফতরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সূত্র জানায়, এই আয়োজন বিশ্ব সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলা সংস্কৃতির এবং সম্প্রীতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে একবিংশ শতকে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। আগামী ২ ডিসেম্বর উদ্বোধনের প্রাথমিক তারিখ ঠিক করা হয়েছে। বগুড়ার মহাস্থানগড়কে এক বছরের জন্য চলতি বছর (২০১৭) সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানীর ঘোষণা দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কায় অবস্থিত সার্ক (সাউথ এশিয়ান এ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশন) কালচারাল সেন্টারের মহাপরিচালক ওয়াসান্থে কোতোয়ালী। সার্কভুক্ত দেশগুলোর নামের ইংরেজী বর্ণমালার ক্রমানুসারে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক রাজধানীর স্বীকৃতি পায় ২০১৬ সালের ২৪ নবেম্বর। কথা ছিল চলতি বছর ২১ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হবে। কিন্তু আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক নগরী বামিহাল ২০১৫ সালে এক বছরের জন্য প্রথমবার সার্ক সাংস্কৃতিক রাজধানী হওয়ার পর তারা নির্ধারিত সময়ে শেষ করেনি। দ্বিতীয় বারের জন্য মনোনীত হয় বাংলাদেশ। আয়োজন যখন শেষ পর্যায়ে তখন সার্কভুক্ত একটি দেশ বিরোধিতা করে। তবে বাংলাদেশের মনোনয়ন ঠিক থাকে। মহাস্থানগড়ে সাংস্কৃতিক রাজধানীর জন্য সবচেয়ে বড় যে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন ছিল তাকেই বর্ধিত করে বিশ্বের দেশে দেশে সাংস্কৃতিক মেল বন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। যার ইংরেজী নামকরণ করা হয় “ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব হারমোনি”। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে মতের আদান প্রদান এবং অনুষ্ঠান আয়োজন বেশি প্রাধান্য পাবে। প্রয়োজনে দেশে দেশে অনুষ্ঠান বিনিময় করা হবে। সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ৫০টির বেশি দেশকে অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে আশা করা হয়েছে, আমন্ত্রিত সকল দেশই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে উৎসবে অংশগ্রহণ করবে। এদিকে উৎসব সফল করতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় লিয়াজোঁ কমিটি, নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-কমিটিসহ কয়েকটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটিগুলোতে আছেন প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, জাতীয় গণ-গ্রন্থাগার অধিদফতরের মহাপরিচালক, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুইজন যুগ্ম সচিব, উপসচিব এবং দেশের ১৭ জেলার জেলা প্রশাসক ও কালচারাল অফিসারগণ। এ ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত মন্ত্রণালয়ের উর্ধতনদের কমিটিগুলোতে রাখা হয়েছে। বগুড়া জেলা কালচারাল অফিসার সাগর বসাক জানান, এই আয়োজন সফল করে তুলতে দিক নির্দেশনা দেয়া শুরু হয়েছে। উৎসবের জন্য হাতে বেশি সময়ও নেই। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহযোগিতায় মহাস্থানগড়কে দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে। বর্তমানে দেশী বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। সূত্রগুলো জানাচ্ছে, উৎসব ঘিরে বিদেশী অতিথিগণ যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারে এবং আবাসনের কোন অসুবিধা না হয় সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। মহাস্থানগড়ে অস্থায়ী সাংস্কৃতিক মঞ্চ নির্মাণ করা হবে। মহাস্থানগড়ের স্থাপনাগুলোকে আলোকসজ্জায় ঝলমলে করে তুলে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রাচীন ইতিহাসের পটভূমি তুলে ধরা হবে। বিদেশীদের কাছে বাঙালীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলো তুলে ধরা হবে। বিদেশীরা তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকা- সফলতার সঙ্গে তুলে ধরে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্প্রীতির মেলবন্ধনে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে, এমনটি আশা করা হয়েছে। এই উৎসবে বগুড়াসহ বাংলাদেশের সকল অঞ্চলের সাংস্কৃতিক কর্মকা- উপস্থাপিত হবে।
×