ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

খুদে শিল্পীদের ক্যানভাসে প্রকৃতির রূপময়তা

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

খুদে শিল্পীদের ক্যানভাসে প্রকৃতির রূপময়তা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিসর্গের সঙ্গে যেন গড়ে উঠেছে শিশু চিত্রকরদের একাত্মতা। খুদে শিল্পীদের ক্যানভাসে উদ্ভাসিত হয়েছে প্রকৃতির রূপময়তা। রং ও রেখার আশ্রয়ে চিত্রপটে উঠে এসেছে ষড়ঋতুর বৈচিত্র্য। কেউ বা এঁকেছে নদীমাতৃক বাংলাদেশের সৌন্দর্য। আছে সবুজ-শ্যামলে আবৃত গ্রাম বাংলার স্নিগ্ধ রূপ। চিত্রিত হয়েছে পাখির কলতান থেকে শুরু করে কাঠবিড়ালীর দুষ্টুমি। চিত্রপটে দেখা মেলে লোকজ বাংলার সাক্ষ্যবহ রহকমারি নক্সা। এমন বৈভবময় বিষয়কে নির্ভর করে শিশুদের আঁকা চিত্রসম্ভারে সেজেছে আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দো ঢাকার লা গ্যালারি। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘প্রকৃতির বৈচিত্র্য’। আলিয়ঁসের পেইন্টিং ফর চিলড্রেন শীর্ষক কর্মশালার শিক্ষার্থীদের চিত্রকর্ম নিয়ে এ প্রদর্শনীর আয়োজন। ছুটির দিনের সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। ৫৫ জন ক্ষুদে শিল্পীর কাজ রয়েছে প্রদর্শনীতে। যারা তাদের চিত্রশিল্পের প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করেছে আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দো ঢাকার ‘পেইন্টিং ফর চিলড্রেন’ ওয়ার্কশপের বিভিন্ন শাখায়। দুই ধরনের শিল্পকর্মে বিন্যস্ত এ প্রদর্শনী। ক্যানভাসের ওপর করা প্রকৃতির চিত্র আর মাটির ‘সরা’য় (গম্বুজাকৃতি ঢাকনা) আঁকা লোকশিল্প। শিশুদের চিন্তার অতলতা ও অসীম কল্পনার সৌন্দর্য বিকাশে এবং আরও বেশি শিল্প সৃষ্টিতে অনুপ্রাণিত করতেই এ প্রদর্শনীটির আয়োজন। প্রদর্শনীটি চলবে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সোম থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচীতে ৭৭৩ শিক্ষার্থী পুরস্কৃত ॥ কলেজ পর্যায়ে বইপড়া কর্মসূচীতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখার জন্যে ৭৭৩ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ঢাকা মহানগরের সেরা ১৮টি কলেজ এবং কেন্দ্রভিত্তিক বইপড়া কর্মসূচী মিলে পরীক্ষার মাধ্যমে এই শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত করা হয়। শুক্রবার সকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আয়োজিত একাদশ শ্রেণীর বইপড়া কর্মসূচীর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়। শুক্রবার সকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় এ আয়োজন বসে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খোন্দকার মোঃ আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, অনুষ্ঠানের সার্বিক সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোঃ শাহ আলম সারওয়ার, হলিক্রস স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শিখা গোমেজ। পুরস্কার হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই, সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। ফজলে কবির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো, বই পড়ার জ্ঞান। তোমরা বই পড়ে মূল্যবোধ অর্জন করবে, যা তোমাদের ভাল মানুষ হতে সাহায্য করবে। দেশীয় লেখকদের পাশাপাশি তোমরা পাশ্চাত্য সাহিত্যিকদের বিভিন্ন আঙ্গিকের বই পড়বে, তাতে করে তোমাদের দেশের বাইরেরও জ্ঞানার্জন হবে। ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আমি মানুষকে দুইভাগে ভাগ করি। বই পড়া মানুষ আর বই না পড়া মানুষ। যে ভাগে বই পড়া মানুষ থাকে, আমি সেই ভাগে চলে যাই। কারণ আমি লেখক মানুষ। বেশি বেশি বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। খোন্দকার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, তোমরা বেশি বেশি করে বই পড়বে। বেশি বই পড়লে জ্ঞানের পরিধি বাড়ে। আগামীতে তোমরা জ্ঞানের দিক থেকে আরও বড় হবে এবং দেশকে সেবা করবে। শাহ আলম সারওয়ার বলেন, তোমরা হয়তো কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার অথবা কেউ শিক্ষক হবে। কিন্তু তার আগে তোমাদের অবশ্যই একজন ভাল মানুষ হতে হবে। আমি এটাই প্রত্যাশা করি। অনুষ্ঠানে একাদশ শ্রেণীর বইপড়া কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীরা বাংলা সাহিত্য ও পৃথিবীর কিশোর সাহিত্যের সেরা ১২টি বই পড়ার সুযোগ পেয়েছে। একটি ছোট্ট পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বইপাঠের মূল্যায়ন করে পঠিত বইয়ের ওপর ভিত্তি করে ৪টি বিভাগে পুরস্কার বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়েছে। মূল্যায়ন পর্বে যারা ৬টি বই পড়েছে, তারা পেয়েছে ‘স্বাগত পুরস্কার’, যারা ৮টি বই পড়েছে তারা পেয়েছে ‘শুভেচ্ছা পুরস্কার’, ১০টি বই পড়েছে যারা তারা পেয়েছে ‘অভিনন্দন পুরস্কার’, আর যারা ১২টি বই পড়েছে তারা পেয়েছে ‘সেরা পাঠক পুরস্কার’। স্মরণে আসাদুল ইসলাম আসাদ ১৯৭৮ সালে বৈরী পরিবেশে রাজশাহীতে চারু ও কারু মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিল্পী আসাদুল ইসলাম আসাদ রাজশাহীতে সামাজিক-সাংস্কৃতিক নব অধ্যায় রচনা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন মহাবিদ্যালয়ের প্রথম গবর্নিং বডির সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার লবিতে শিল্পী আসাদুল ইসলাম আসাদের স্মৃতি-সভায় এসে কামাল লোহানী রাজশাহীতে চারুকলা কলেজ প্রতিষ্ঠার নানা প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তার পাশাপাশি বাংলাদেশ স্কুল টেক্সটবুক বোর্ড সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ এলতাস উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক ডিন বনিজুল হক বক্তব্য রাখেন। কামাল লোহানী বলেন, আজ আসাদকে স্মরণ করতে গিয়ে মনে পড়ছে, ওর এক প্রস্তাবে কি করেই না রাজশাহী শহরের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক নব অধ্যায় রচিত হয়েছিল। নতুন জগতে প্রবেশ করেছিল শহর। মানুষের মনের শৈল্পিক চিন্তা কত না প্রসারিত হয়েছিল। তিনি বলেন, এই রোগাপাতলা রাসপুটিন আসাদ যদি স্বপ্নটা নিয়ে সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরে সংগঠিত না করত, তবে রাজশাহীর মতো শহরে তখন শিল্পের এক নিশ্চুপ বিপ্লব ঘটত না। শিল্পী আসাদুল ইসলাম আসাদ দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগে গত ১ আগস্ট মারা যান। ছায়ানটে শ্রোতার আসর সুরের আশ্রয়ে আলোড়িত হলো ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে। আর কণ্ঠের খেলায় শ্রোতাকে বিভোর করে রাখলেন শাহীন সামাদ ও মনীষ সরকার। দুই গুণী কণ্ঠশিল্পীর অংশগ্রহণে শুক্রবার ছুটির দিনের সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো ছায়ানটের শ্রোতার আসর। বেণুকা ললিতকলার কর্মশালা ‘কাদামাটি’ কাদামাটি শীর্ষক দুই দিনব্যাপী পুতুল তৈরির এক কর্মশালার আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বেণুকা ললিতকলা কেন্দ্র। কেন্দ্রের চারুকলা বিভাগের তত্ত্বাবধানে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি বয়েজ হাইস্কুল কলেজে এ কর্মশালার সূচনা হয় শুক্রবার সকালে। প্রধান অতিথি হিসেবে এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন সুধীর চন্দ্র দাস। এসময় উপস্থিত ছিলেন কর্মশালার প্রশিক্ষক মৃৎশিল্পী আবুল মিয়া। তিনি ও তার সহযোগীরা পুতুল তৈরির প্রশিক্ষণ দেন একঝাঁক খুদে শিক্ষার্থীকে। আজ শনিবার শেষ হবে এ কর্মশালা।
×