ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অপরাধ দমনে ওয়াচম্যান প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর চিন্তা

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

অপরাধ দমনে ওয়াচম্যান প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর চিন্তা

শংকর কুমার দে ॥ অপরাধমূলক কর্মকা- দমনে অত্যাধুনিক ‘ওয়াচম্যান’ প্রযুক্তি। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার চেয়েও উন্নত। ক্যামেরা নষ্ট হলে আলামত ধ্বংস হয়ে যায়। ওয়াচম্যানের ডিভাইস ভেঙ্গে ফেললেও এ সংক্রান্ত তথ্য মুঠোফোনে তথ্য আকারে পৌঁছে যাবে। কিন্তু ওয়াচম্যান প্রযুক্তি ব্যয়বহুল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ওয়াচম্যানকে ব্যয় কমিয়ে কিভাবে অপরাধ দমনের কাজে লাগানো যায় সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। পুলিশের উচ্চ পর্যায় সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশের কর্তব্যরত সদস্য বা কর্মকর্তারা যদি কর্মস্থলে ফাঁকি দেয় কিংবা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয় তাহলে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে। চুরি-ডাকাতির উদ্দেশে কেউ দরজা-জানালা ভাঙলে কিংবা অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে এ সংক্রান্ত তথ্য চলে যাবে নিয়ন্ত্রণকক্ষে। এ ছাড়াও এ তথ্য পৌঁছে যাবে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক ও মনোনীত লোকজনের মুঠোফোনে। অপরাধমূলক কর্মকা- দমনে এই অত্যাধুনিক ‘ওয়াচম্যান’ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরুর চেষ্টা করা হয় চট্টগ্রামে। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রথম উদ্যোক্তা হন তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম। চার বছর আগে এই প্রযুক্তি চালুর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে এই প্রযুক্তি চালুর বিষয়টি খুব বেশি অগ্রসর হয়নি। ইতোমধ্যে আবার সিএমপি কমিশনার পদ থেকে বদলি হয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি পদে যোগদান করেছেন মোঃ শফিকুল ইসলাম। ঢাকা রেঞ্জে ডিআইজি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ওয়াচম্যান প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে অপরাধীকে শনাক্ত ও গ্রেফতার সহজসাধ্য হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াও পালটে যাবে। মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতন হলে অপরাধের প্রবণতাও কমবে। কিন্তু এটা খুবই ব্যয়বহুল। অভিজাত এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে এই প্রযুক্তির ব্যবহারে এগিয়ে আসলে তারা অন্তত অপরাধ প্রবণতা থেকে মুক্ত হতে পারবেন। তবে এটা খুবই ব্যয়বহুল বলে অভিমত ব্যক্ত করেন ডিআইজি শফিকুল ইসলাম। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওয়াচম্যান ডিজিটাল পুলিশ প্রটেকশান সিস্টেম (ডিপিপিএস) প্রযুক্তির বিষয়ে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ইজি গ্রুপের সঙ্গে সিএমপির চুক্তি সই হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের চারটি প্রতিষ্ঠান এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, ওয়াচম্যান প্রযুক্তি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার চেয়েও উন্নত। ক্যামেরা নষ্ট হলে আলামত ধ্বংস হয়ে যায়। ওয়াচম্যানের ডিভাইস ভেঙ্গে ফেললেও এ সংক্রান্ত তথ্য মুঠোফোনে তথ্য আকারে পৌঁছে যায়। ওয়াচম্যান প্রযুক্তি স্থাপনে এককালীন ৫০ হাজার টাকা ও প্রতি মাসে পরিচালনা বাবদ ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এ কারণে ব্যক্তিগত পর্যায়ে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষের মধ্যে উৎসাহ-আগ্রহ দেখা যায়নি। পুলিশ সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খুব ভোরে লঞ্চ, ট্রেন, বাসে যাত্রীরা যাতায়াত করেন। তখন টহলরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঠিকমতো ডিউটি করছেন কিনা এবং তারা অসদুপায় অবলম্বন করছে কিনা তা ওয়াচম্যান প্রযুক্তির মাধ্যমে ধরা পড়বে। পুলিশ সদর দফতরের একজন উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওয়াচম্যান প্রযুক্তিটি সরকারী পর্যায়ে বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে চালু করা যায় কিনা সেই বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে আছে।
×