ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশ যান সচিবরা

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশ যান সচিবরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উপযুক্ত মানুষকে প্রশিক্ষণের বদলে বিদেশ ভ্রমণ মুখ্য হয়ে ওঠায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিদ্যুত এবং জ্বালানিখাত। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আয়োজিত একটি সেমিনারে এই অভিযোগ করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে যাদের প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশ পাঠানো হয় তাদের অধিকাংশেরই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ফলে ফিরে এসে তারা এসব কাজে অংশও নেয় না। সেমিনারে অভিযোগ করা হয়, প্রি-পেইড মিটারের প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশ যায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগের কর্মকর্তারা। এমনকি কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশ যান সচিব, অতিরিক্তি সচিব, যুগ্ম সচিব। ফলে দেশের টাকার অপচয় হচ্ছে। কিন্তু দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে উঠছে না। যথাযথ লোক প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পাক্ষিক পত্রিকা ‘এনার্জি এ্যান্ড পাওয়ার’ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পত্রিকাটি ওই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে প্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, বাংলাদেশের এই মুহূর্তে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। ফলে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে জোর দিতে হবে। এজন্য বেশি করে প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু বছরের পর বছর যাদের প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ পাঠানো হচ্ছে তারা উপযুক্ত নয়। ফলে উপযুক্ত লোকদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা করা দরকার। তবে দেশ এগিয়ে যাবে। পাক্ষিকটির সম্পাদক মোল্লা আমজাদের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম। মূল আলোচনায় অংশ নেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ম তামিম, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, সাংবাদিক অরুণ কর্মকার, পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান এস এস মায়েদ, বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মর্তুজা চিশতী। সেমিনারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বেশির ভাগ কাজ বিদেশী পরামর্শক নিয়োগ দিয়ে করা হয়। এতে রাষ্ট্রের অনেক অর্থের খরচ হচ্ছে। অন্যদিকে প্রাইভেট সেক্টর দক্ষ লোক তৈরি করছে। পিডিবি এসব প্রতিষ্ঠানকে কাজে লাগাতে পারে। এ সময় তিনি আরও বলেন, জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার করতে পারলে ৩০ শতাংশ সাশ্রয় করা সম্ভব। দক্ষতা বাড়াতে উৎপান ও ব্যবহার উভয় ক্ষেত্রে উন্নয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা প্রচলিত এই জ্বালানির ব্যবহার থেকে বঞ্চিত। সকলের জন্য জ্বালানি নিশ্চিত করতে হবে। জ্বালানির জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ সময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। যে কোন উন্নয়নশীল দেশের জন্য টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করতে অর্থায়ন ও কারিগরি দিক বড় চ্যালেঞ্জের। ফলে টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করতে হবে। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তাজুল ইসলাম বলেন, এখনও মানসম্মত বিদ্যুত পাচ্ছি না। লোডশেডিং হচ্ছে। এটা পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করতে দক্ষ জনবল লাগবে। দক্ষ জনবল তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠান লাগবে। মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করা যাবে না। টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারী বেসরকারী উভয় খাতকে এ উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে।
×