ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আইনী পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আইনী পরামর্শ

প্রশ্ন : একজনের সঙ্গে ফেসবুকে ২০১৫ সালে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে আমি জানতে পারি সে তার পড়াশোনা থেকে শুরু করে সব কিছুই মিথ্যা বলেছে। নিজেকে ঢাকা ভার্সিটির স্টুডেন্ট পরিচয় এবং জব সব কিছুই ছিল তার মিথ্যা, সে একজন ড্রাইভার। সব শুনে আমি ব্রেকাপ করি। কিন্তু ব্রেকাপের পর সে আমায় প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়েই চলছে আমার ছবি দিয়ে খারাপ ছবি বানাবে ইত্যাদি। তার পাঠানো খারাপ মেসেজগুলো এখনও আমার ফোনে আছে। এমন অবস্থায় আমি কী রকম আইনী ব্যবস্থা নিতে পারি। আশা করি জানাবেন। লিজা জাহান রংপুর থেকে উত্তর : লিজা আপনার প্রশ্নটি বর্তমান সময়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময় অনেকেই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আপনিও একটি বিশেষ ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। আপনার সমস্যাটি আপনার জীবনের জন্য, মান সম্মানের জন্য যেমন জটিল, তেমনই আইনগত ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও তেমনই জটিল। আপনার মেসেজগুলো এক্ষেত্রে বিচার বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। আপনার জন্য কোন আইনী সহায়তা দেয়ার আগে আপনাকে যে খারাপ মেসেজগুলো পাঠিয়েছে, সেগুলো দেখতে হবে, কিভাবে কোন্ পর্যায়, কোন্ আকারে মেসেজগুলো পাঠিয়েছে, তা জানা একান্ত প্রয়োজনীয়। এগুলো পর্যালোচনা না করে আপনার মামলা তথ্যপ্রযুক্তির ৫৭ ধারায় করা সম্ভব হবে কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আপনার প্রশ্ন থেকে অপরাধজনক ভীতি প্রদর্শনের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। তাই আপনাকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য আপনি দ-বিধির ৫০৩ ও ৫০৬ ধারায় মামলা করতে পারেন এবং আপনার সংশ্লিষ্ট থানায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার ঘটনাটি উল্লেখপূর্বক একটি সাধারণ ডায়েরি করতে পারেন। ৫০৩ ও ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করলে যেহেতু সে আপনার সুনাম ক্ষতি করার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে অতএব সে দ-বিধির ৫০৩ ধারা অনুযায়ী অপরাধে অপরাধী হবে এবং দ-বিধির ৫০৬ ধারা অনুযায়ী শাস্তি পাবে। তার অপরাধ প্রমাণিত হলে দ-বিধির ৫০৬ ধারার বিধান সাপেক্ষে সে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদ-ে দ-িত হতে পারে। আবার আদালত তাকে অর্থদ-ে দ-িত করতে পারে। আর আপনার মেসেজগুলো পরীক্ষা করে যদি দেখা যায়, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংক্রান্ত আইন ও বিধি (ও.ঈ.ও.অপঃ) আইনের ৫৭ ধারায় এই মামলা করা যায়, তাহলে সে সর্বোচ্চ চৌদ্দ বছর এবং সর্বনিম্ন সাত বছর কারাদ-ে দন্ডিত হতে পারে। তবে আপনার চিঠিতে যতটুকু বোঝা যাচ্ছে, আপনাকে যে মেসেজগুলো পাঠানো হয়েছে, সেগুলো আপনার ব্যক্তিগত মোবাইলের ওহনড়ী-এ। অতএব এই মামলা আইসিআই এ্যাক্টে করা হয়ত সম্ভব হবে না। কারণ ওঈও অপঃ-এর ৫৭ ধারায় মামলা করতে হলে অবশ্যই ইলেকট্রনিক ফরমে মিথ্যা, অশ্লীল অথবা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা সম্প্রচার হতে হবে। আপনার মেসেজগুলো প্রচার বা সম্প্রচার হয়েছে। আপনার প্রশ্নের ভেতর এরূপ কোন তথ্য নেই, তাই আপনার মামলাটি ওঈও অপঃ-এর আওতায় পড়বে না। আপনাকে মামলা করতে হলে দ-বিধির ধারা ৫০৩-এর অপরাধজনক ভীতি প্রদর্শন এই ধারায়ই মামলা করতে হবে।
×