অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সোনালি আঁশ পাটের সুদিন ফেরাতে এবার একগুচ্ছ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি জেলায় পাটজাত পণ্যের ডিসপ্লে সেন্টার এবং প্রথমবারের মতো দেশে জুট কম্পোজিট কারখানা গড়ে তুলতে ১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশে বহুমুখী পণ্যের জন্য যে কাঁচামাল সঙ্কটা তাও কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।
বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ পাট। বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো শিল্পায়নের স্বাদ দিয়েছে সোনালি আঁশের প্রতিটি তন্তু। এক সময় যার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা এসেছে। কিন্তু এই স্বস্তি খুব বেশি লম্বা হয়নি। কারণ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পাটকলগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা কমেছে সময়ের সঙ্গে। এছাড়া কলগুলোতে পণ্য বৈচিত্র্য আনতে না পারার ব্যর্থতাও একরকম ডুবিয়েছে এই শিল্পকে। এছাড়াও বহুমুখী পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে যে বৈচিত্র্যপূর্ণ কাপড় ব্যবহার হয়, তাতে মাত্র ৪ থেকে ৫ রকমের কাপড় পাওয়া যায় দেশীয় মিলগুলোতে। যেখানে প্রতিবেশী ভারতে মিলে ১০৫ থেকে ছয় রকম বৈচিত্র্যপূর্ণ কাপড়।
এ বছরের বাস্তবতা হলো, সরকারী কলগুলো টিকিয়ে রাখতে প্রায় ৬শ’ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে জনগণের করের টাকা থেকে। যদিও এমন বাস্তবতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারী উদ্যোগ ও উদ্যমে ঘাটতি নেই বলে জানালেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, কাঁচাপাটের উৎপাদন বাড়াতে বছরে অন্তত দুইবার পাট চাষ করার বিষয়েও চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এছাড়াও রফতানির নতুন বাজার ধরতে আগামী ১ মাসের মধ্যেই আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসবে সরকারী প্রতিনিধি দল।
পাট উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে বাংলাদেশ। বড় হচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্যের বৈশ্বিক বাজারও। বিশাল এ বাজার ধরতে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার যে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে এই চিত্র। উদ্যোক্তাদের হিসাবে, প্রতিটন কাঁচাপাট থেকে রফতানি আয় করা যায় সর্বোচ্চ ৬শ’ ডলার। যেখানে বহুমুখী পণ্য রফতানি করে মিলে ৩ থেকে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: