ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফিরে দেখা

প্রকাশিত: ০৩:১০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ফিরে দেখা

বৃষ্টি হলেই ভাড়া ডাবল! শরীফুল ইসলাম ॥ ১০ সেপ্টেম্বর বেলা পৌনে ২টা। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসার সামনে থেকে কুড়িল রেলগেইট যেতে রিক্সাওয়ালা ভাড়া হাঁকেন ৬০ টাকা। মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে এতো ভাড়া হয় কি করে জিজ্ঞেস করতেই রিক্সাওয়ালা বিরক্তির সুরে বলেন, ‘জানেন না বৃষ্টি হলেই ভাড়া ডাবল’। জবাবে আমি বললাম সামান্য একটু বৃষ্টি হয়েছে এতেই ভাড়া ডাবল! ‘হ্যাঁ সামান্য বৃষ্টি বলেই তো ডাবল ভাড়া, বেশি বৃষ্টি হলে তো আরও বেশি ভাড়া চাইতাম’। দরকষাকষি করে লাভ হবে না বুঝতে পেরে দ্রুত উঠে পড়ি রিক্সায়। আর মনে মনে ভাবতে থাকি শুধু রিক্সাওয়ালাদের দায়ী করে লাভ নেই। বৃষ্টির দিনে এভাবেই সিএনজিচালিত অটোরিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহনও যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। হিজড়া কালেকশন শাহীন রহমান ॥ ইদানীং বাসে চড়লেই ভাড়ার সঙ্গে হিজড়াদের চাঁদার টাকাও গুনতে হয়। ঢাকার রাস্তার প্রায়ই এই চিত্র দেখা যায়। কোথাও একটু বাস থামলেই জোড়ায় জোড়ায় তারা উঠে পড়ে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বচসাও কম হয় না। একজন ভিক্ষুক যাত্রীদের দয়া দাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভর করে ভিক্ষা চায়। অপরদিকে যাত্রীদেরই হিজড়াদের কাছে দয়া দাক্ষিণ্য করে অপারগতা প্রকাশ করতে হয়। এর ব্যত্যয় হলে বিপদ। শুধু রাজধানীর ঢাকা নয়। মহাসড়কগুলোতেও তাদের উৎপাত কম নয়। ঈদে বাড়ি ফিরিছি। প্রচ- জ্যামের কারণে পাটুরিয়া থেকে নেমে লঞ্চ পার হয়ে ওপারে গিয়ে লোকাল বাসে বসে আছি। সামনে থেকে একজনকে চাঁদা তুলতে দেখলাম। কাছে আসতেই দেখি একজন হিজড়া প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ১০ টাকা করে আদায় করছে। আর বলছে হিজড়া কালেকশন। সবাই দেন। আমার কাছে আসতেই ভান করে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলাম। পাশ দিয়ে সে চলে গেল। এই যাত্রায় রক্ষা। আরেকটু হলেই ট্রেনের তলে! রুমেল খান ॥ ঘটনা আগস্টের প্রথম সপ্তাহের। মনে পড়লে এখনও গা শিউরে ওঠে। সেদিন জনকণ্ঠ অফিসে যাচ্ছি রেললাইন দিয়ে ‘হন্টন প্রক্রিয়া’য়। মুগদাপাড়া থেকে বাসে মালিবাগ রেলগেট গিয়ে তারপর রেললাইনের (বহে সমান্তরাল!) ওপর দিয়ে ‘মেপে মেপে’ প্রতিটি পদক্ষেপে অল্প সময়েই গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাই। সেদিন হাঁটতে হাঁটতে মগবাজার ওয়্যারলেস রেলগেটের কাছাকাছি চলে এসেছি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এমন সময় বিপরীত দিক থেকে প্রচ- বেগে একটি ট্রেনকে হুইসের বাজিয়ে ছুটে আসতে দেখলাম। তাকিয়ে আছি গতিশীল ট্রেনের দিকে। হঠাৎ দেখলাম চলন্ত ট্রেনের খোলা দরজা থেকে একজন লোক লাফ দিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করছে। কিন্তু ঠিকভাবে নামতে পারল না। ভারসাম্য হারিয়ে চিৎপটাং হয়ে মাটিতে পড়ল। সেই অবস্থাতেই একটা পা ট্রেনের চাকার খুব কাছাকাছি! তীব্র আতঙ্কে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। এই বুঝি চোখ মেলেই দেখব...। না, অলৌকিকভাবেই লোকটা ট্রেনের তলায় পড়েনি। বেঁচে আছে এবং সম্পূর্ণ অক্ষতদেহে। আশপাশের লোকজন হই-হই করে উঠল। ইতোমধ্যেই ট্রেন চলে গেছে। লোকটা উঠে দাঁড়িয়ে প্যান্টে লেগে থাকা মাটি সাফ করছে। কাছে গিয়ে বললাম, ‘আরেকটু হলেই তো ট্রেনের তলে পড়তেন!’ লোকটি বোকার মতো হেসে বললো, ‘হ ভাই, পইড়া গেছিলাম। আল্লায় বাঁচাইছে।’
×