ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

একাধিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি ॥ মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

একাধিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি ॥ মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন

মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন। নব্বই দশকের কবি। একাধারে সাহিত্যিক, মঞ্চ ও টিভি নাট্যকার, নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং প্রযোজক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক লেখক ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা মির্জা সাখাওয়াৎ বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত নাট্যকার। ‘হরিজন’ নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে নন্দিত হয়েছেন। সাহিত্য সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় ব্যতিক্রমী কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। মঞ্চ নাটক রচনা ও নির্দেশনার বিস্তর অভিজ্ঞতা রয়েছে। সম্প্রতি নতুন একাধিক চলচ্চিত্র নির্মাণে হাত দিয়েছেন। চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য বিষয়ে গুণী এই ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কথা হয়। আপনার সাম্প্রতিক ব্যস্ততা প্রসঙ্গে জানতে চাই? মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন : নতুন একাধিক চলচ্চিত্রের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। তার মধ্যে ‘তুমি কেনো এতদূরে’ নামের একটি চলচ্চিত্রের শূটিং করছি। এছাড়া কবি রাশেদ রেহমানের উপন্যাস অবলম্বনে ‘আজিরন বেওয়া’ এবং ‘আমাকে ছুঁয়ে দেখো’ নামে একটি চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্ট তৈরি শেষ হয়েছে। অচিরেই এই চলচ্চিত্রেরও শূটিং শুরু করব। মূলত, আমি কাজ করতে পছন্দ করি। বেছে বেছে করি। অল্প কাজ করি, ভাল কিছু করার চেষ্টা করি। প্রবীন ও গুণী শিল্পীদের পাশাপাশি নতুনদের নিয়ে শুরু করা আমার নতুন কাজগুলোও ভাল হবে আশা করি। আপনার প্রথম চলচ্চিত্র ‘হরিজন’ প্রসঙ্গে জানতে চাই? মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন : ‘হরিজন’ ২০১০-২০১১ অর্থবছরে সরকারী অনুদানপ্রাপ্ত নির্মিত একটি চলচ্চিত্র ছিল। চলচ্চিত্রের কাহিনী সংলাপ চিত্রনাট্য ও পরিচালনা আমার। চলচ্চিত্রটি ২০১৪ সালের ৭ নবেম্বর মুক্তির পর প্রশংসিত হয়। চলচ্চিত্রটি ‘জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলী সাহিত্য পুরস্কার’-সহ একাধিক সংগঠন থেকে পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করে। আপনার উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর বিষয়ে জানতে চাই? মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন : মরণব্যাধি এইডস বিষয়ক একটি গল্প নিয়ে ২০১৩ সালে ‘মেঘ’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলাম। এছাড়া এসিড সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘পাষ-’ নামে পরিচালনা করেছি। জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলী স্মরণে প্রামাণ্যচিত্র ‘একটি নক্ষত্রের জন্মদিন’, বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মরণে ‘স্মরণীয় বরণীয়’, জেলহত্যা বিষয়ক প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘ইতিহাসের কালোপাতা’, তুরস্কের ইস্তান্বুল সিটি নিয়ে ‘সাম সিনারি অব সিটি অব ইস্তান্বুল’ নির্মাণ করেছি। আমার রচিত ও পরিচালিত টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘একটি যুদ্ধশিশুর গল্প’ বিটিভিতে, ‘তবুও সুপ্রভাত’, ‘একজন মফিজউদ্দিন’ বিটিভিতে, ‘পরাবৃত্ত’, ‘ঘরে ফেরা’, ‘অন্তরালে’ বিটিভিতে, ঈদের নাটক ‘হাউস নাম্বার থার্টিন’ বৈশাখীতে, ‘নান্টু মামার মহাকাব্য’ ‘ডাস্টবিন’, ‘তাকে বিসর্জন দিয়েছি’, ধারাবাহিক ‘অন্যরকম বৃষ্টি’ বিটিভিতে প্রচার হয়। বেতার নাটক ‘জীবনছন্দ’, ‘হৃদয় নামের নদী থেকে’, ‘অবসান’, ‘সংলাপ’, ‘পদ্মদিঘির নীল ঢেউ’, ‘অনঙ্গ অপ্সরা তুমি’, ‘কক্ষচ্যুত নক্ষত্র’, ‘কবি’, ‘আবেদন’, ‘কালপুরুষ’, ‘আজিমুদ্দিনের পালা’, ‘বাবা’, ‘বীরাঙ্গনা’, ‘মুনীয়া’, ‘নীল মেঘের দেশে’, ‘আদুরির অভিযাত্রা’, ‘সম্পদ, ‘ঘৃণা’। রচিত ও নির্দেশিত মঞ্চ নাটক ‘রক্তে মাখা স্বদেশ’, ‘জীবনের শেষ উপহার’ রচিত ‘ঝাঁঝালো সূর্যের নিচে’, ‘স্বাধীনতা উত্তর বাংলা’, ‘কেরামত আলীরা কেমন আছে’, ‘রক্তের কসম’, ‘মানচিত্র’ ‘পেটুক’, শিশুতোষ নাটক ‘যুদ্ধমুক্ত বিশ্ব চাই’, রম্য নাটক ‘হাম্বা’ প্রভৃতি। আপনার রচিত প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ কি কি? মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন : ‘পদার্পণ’ (কিশোর কাব্যগ্রন্থ), ‘আগুন প্রহরের পঙ্ক্তি’ (কাব্যগ্রন্থ), ‘পিতা প্রমিথিউস’ (কাব্যগ্রন্থ), ‘যুদ্ধবিরোধী কবিতা (সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থ), মুক্তিযুদ্ধের কবিতা, ‘শতাব্দীর স্বাক্ষার’ সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থ, ‘হৃদয়ের অন্তরালে’ (উপন্যাস), ‘আমাকে ভুল না (উপন্যাস), ‘জোছনার পালক’ (উপন্যাস), ‘ইতিহাসের ধারায় এম মনসুর আলী ও রক্তাক্ত নভেম্বর’৭৫ (গবেষণালব্ধ জীবনী গ্রন্থ), ‘নিত্যপ্রাণের দীপ্ত তারকা’ (একটি প্রামাণ্য সঙ্কলন), ‘মানবতা ও বিশ্বশান্তি’ (সম্পাদিত গ্রন্থ), ‘স্মরণীয় বরণীয় বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া’ (প্রামাণ্য গ্রন্থ), ‘জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলী’ (প্রামাণ্য গ্রন্থ), ‘মুক্তিযুদ্ধের নাটক’ (যন্ত্রস্থ), ‘দাহ’ (সাহিত্যপত্র), ‘বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা’ (প্রামাণ্যগ্রন্থ),‘ ‘জনকের দুহিতা যখন ফিরলেন’ (প্রামাণ্য গ্রন্থ), ‘নারীকাব্য’ (কাব্যগ্রন্থ), ‘ছড়ায় ছড়ানো বাংলাদেশ’ (ছড়ার বই), ‘একাত্তরের কষ্টকাব্য’ (বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাতকার), ‘তোমার কাছে লুণ্ঠিত হয়ে যাই’ (কাব্যগ্রস্থ), ‘মোহন গায়েনের বাঁশী (গল্পগ্রন্থ), ‘তোমারই চরণে নিজেরে সঁপিলাম (গীতিকাব্য)। এছাড়াও ‘ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু’, ‘গণতন্ত্র মুক্তিপাক/কারাবন্দী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিবেদিত কবিতাগুচ্ছ’. ‘নন্দিত নেত্রী শেখ হাসিনা গর্বিত বাংলাদেশ’, ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনা’, ‘শেখ রাসেল বাঙালীর কনিষ্ঠতম ভূমিপুত্রের নাম সঙ্কলনসহ উল্লেখযোগ্য জাতীয় এবং একাধিক আন্তর্জাতিক সঙ্কলন ও সাময়িকীতে লেখালেখি করেছি। তুরস্ক ও ভারত ভ্রমণ করেছি। বেশকিছু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন? মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন : হ্যাঁ। সম্মাননা বা স্বীকৃতি কাজের গতি বাড়িয়ে দেয়। আমার ক্যারিয়ারে বেশকিছু সম্মাননা পেয়েছি। এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে ২০১৫ সালে ‘জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সাহিত্য পদক’, ২০১৬ সালে ‘কলমসৈনিক গুণীজন পদক’, ‘হরিজন’ চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্টের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক উৎসাহ পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ বেতার নাট্যকার হিসেবে ২০০৮ সালে এসডিসিএফ এ্যাওয়ার্ড, সাহিত্য সংগঠন ম্যাজিক লণ্ঠনের ১২৪তম আড্ডার কবি হওয়ার সম্মাননা, টাঙ্গাইল সাধারণ গ্রন্থাগারের আয়োজনে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসবে সম্মাননা পেয়েছি। আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন : আপাতত হাতে নেয়া চলচ্চিত্রের কাজগুলো শেষ করতে চাই। আরও ভাল ভাল কাজ করতে চাই। সাহিত্য, সংস্কৃতি যেটাই হোক, দেশের মানুষ মনে রাখবে, মানুষের উন্নয়নে কাজে লাগবে, এমন কাজ বেশি বেশি করতে চাই। সংস্কৃতি অঙ্গনে আরও বেশি বেশি ভূমিকা রাখতে চাই। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের দোয়া ও সহযোগিতা চাই। -সাজু আহমেদ
×