ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নেইমারের বার্সা ছাড়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। যা এখনও অব্যাহত। অনেকেই বলছেন, দল পাল্টানোর সিদ্ধান্ত ঠিক আছে, তেমনি কেউ কেউ বলছেন ঠিক হয়নি। আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার এ দু’টোর কোন পথেই হাটেনটি। তিনি অনেকটা সাবধানী কথা বলেছেন। ওয়েঙ্গার জানিয়েছেন, এ

নেইমার সবকিছু পাল্টে দিয়েছে’

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নেইমার সবকিছু পাল্টে দিয়েছে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দল বদলের চিরাচারিত নিয়মই পাল্টে দিয়েছেন নেইমার। সাধারণত বড় বড় তারকারা একটি ক্লাবে দীর্ঘ সময় ধরে থাকেন। বর্তমানের দুই সেরা তারকা লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো যেমন বার্সিলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদে আছেন। কিন্তু বার্সার আরেক তারকা নেইমার এ ধারার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। তিনি কাতালান শিবির ছেড়ে ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনে (পিএসজি) গিয়েছেন অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে। নেইমারের বার্সা ছাড়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। যা এখনও অব্যাহত। অনেকেই বলছেন, দল পাল্টানোর সিদ্ধান্ত ঠিক আছে, তেমনি কেউ কেউ বলছেন ঠিক হয়নি। আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার এ দু’টোর কোন পথেই হাটেনটি। তিনি অনেকটা সাবধানী কথা বলেছেন। ওয়েঙ্গার জানিয়েছেন, এটি নেইমারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে এই দলবদল সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। মেসি ও লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে বার্সিলোনায় না খেলে এডিনসন কাভানির সঙ্গে খেলতে পিএসজিতে যোগ দিয়েছেন নেইমার। সেখানে নতুন সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা উদীয়মান তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে। বার্সিলোনার মতো বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব ছেড়ে নেইমার পিএসজিতে যাওয়ায় বিস্মিতই হয়েছেন ওয়েঙ্গার। ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ে ব্রাজিলিয়ান তারকার এমন সিদ্ধান্ত খুব একটা পছন্দ হয়নি আর্সেনাল কোচের। সাক্ষাতকারে ওয়েঙ্গার বলেন, নেইমার তার বিবৃতিতে সত্যিকার অর্থেই প্রকাশ করেনি সে কেন দলবদল করল। খেলোয়াড়দের ইচ্ছেই থাকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলা। আর সে অন্য পথ বেছে নিয়েছে। নেইমার কেন পিএসজিতে গেছেন তার কয়েকটি কারণ খুঁজে বেরিয়েছেন ওয়েঙ্গার। বলেন, সে কেন গেল? আর্থিক কারণে অথবা ভেবেছে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন (পিএসজি) রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনার কাছ থেকে আগামীতে বিশ্বসেরা দলের খেতাব ছিনিয়ে আনবে। অথবা হয়ত এটি ব্যক্তিগত কারণে। সে হয়ত চেয়েছে দলটা তাকে ঘিরেই আবর্তিত হোক এবং সে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পাক। তবে সবকিছুর পর সে যা করেছে ভেবেচিন্তেই করেছে। এটা স্বীকার করতে হবে, নেইমার দল বদলের চিরাচারিত নিয়ম পাল্টে দিয়েছে। নেইমারের পারফর্মেন্স দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও ক্ষুরধার হয়েছে। যার প্রমাণ রেখেছেন সাবেক ক্লাব বার্সিলোনা ও জাতীয় দল ব্রাজিলের হয়ে। সাহসী এই যুবার পারফর্মেন্স এমন যে, মনে হয় তিনি একাই এক শ’। মেসির ছায়া থেকে বের হয়ে আসতে গত ৩ আগস্ট দলবদলের বিশ্বরেকর্ড গড়ে বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দিয়েছেন। নেইমারের এই দলবদল বিশ্ব ফুটবলের চিত্রই পাল্টে দিয়েছে। এতে বরং সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ ফুটবলের সৌন্দর্যের অপর নাম এখন নেইমার। সেলেসাও তারকা ন্যুক্যাম্পে আসার পর বার্সার সৌন্দর্যও বেড়েছিল। সবাই বলতো মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ জুটির কথা। সান্টোসে যখন ছিল তখন সেই ক্লাবটারও বাড়তি সৌন্দর্য তৈরি হয়েছিল। টানা দুই বছর আলোচনায় ছিল ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটিও। নেইমার একজন সুপারস্টার। সে যেখানে যাবে সেখানে বাড়তি একটা উন্মাদনার যেমন তৈরি হবে তেমনি ক্লাব ফুটবলের সৌন্দর্যটা আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। যদি মেসি আজ ইতালিয়ান কোন ক্লাবে যায় তাহলে একইভাবে সেই ক্লাবের সৌন্দর্য বাড়বে। এখন বার্সার সৌন্দর্য মেসি। সে না থাকলে বার্সার খেলা দেখবে ক’জন। যেমন কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনা যখন নেপোলিতে খেলত তখন সেই ক্লাবটি ছিল আলোচনায়। এখনও পর্যন্ত নেপোলির আলোচনা আসলেই ম্যারাডোনার কথা চলে আসে। একইভাবে ডেভিড বেকহ্যাম, রোনাল্ডিনহো, রোনাল্ডো, রবার্তো কালোর্সরা যখন যেখানে খেলেছেন নিশ্চিতভাবেই সেখানে ফুটবলের বাড়তি উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। এসবই সৌন্দর্য। ফুটবলের এই সৌন্দর্য, সৌরভ এখন ছড়িয়ে পড়েছে ফরাসী ফুটবলে; সর্বোপরি বিশ্ব ফুটবলে। তাই নেইমারের দলবদলে বার্সা সমর্থকরা কষ্ট পেলেও ফুটবরের জন্য মঙ্গলই হয়েছে বলে ধারণা অনেকের।
×