স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোনার বার পাচার করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ায়, নতুন কৌশল নিয়েছে চোরাকারবারিরা। এখন সোনা গলিয়ে পাত বানিয়ে সাধারণ এলুুমিনিয়াম হিসেবে আনা হচ্ছে। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। যেখানে বসে পাত বানানো হয়, সেখান থেকেই এক সোর্স গোপনে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়। এজন্যই সোমবার ফাঁস হয়ে গেছে এই পাত রহস্য। এদিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমনই সোয়া দুই কেজি স্বর্ণসহ একজনকে আটক করা হয়। রবিবার মধ্যরাতে মালয়েশিয়া থেকে আসা এক যাত্রীর কাছ থেকে ২১টি সোনার পাত উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। আটক ব্যক্তির নাম জিন্নাত মাহমুদ শামীম (৪১)। তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে।
জানা যায়, জিন্নাত কুয়ালালামপুর থেকে রবিবার রাত পৌনে একটায় ঢাকায় পৌঁছান। দ্রুত গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার চেষ্টাকালে তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এরপর তার দুটি লাগেজ স্ক্যানিং করে স্বর্ণের অস্তিত্ব¡ পাওয়া যায়। পরে ব্যাগ দুটোর ভেতরে সংযুক্ত অবস্থায় লোহার রিংয়ের ভেতরে হলুদ রঙের স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় জিআই তার আকৃতির ২১টি স্বর্ণপাত উদ্ধার করা হয়। আটক স্বর্ণের মূল্য প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। শুল্ক গোয়েন্দাদের নজরদারি এড়াতে এই কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে বলে ওই যাত্রী জিজ্ঞাসাবাদে জানান। জিন্নাত মাহমুদ জানান, তিনি একজন ব্যবসায়ী। চলতি বছরে তিনি ১৭ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। সোমবার সকালে তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এই আটকের ঘটনায় শুল্ক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ সম্পর্কে শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জনকণ্ঠকে বলেন, এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম। এটা কল্পনাতীত। সোনা গলিয়ে বিশেষভাবে পাত তৈরি করে তাতে কেমিক্যাল মিশ্রণ করা হয়। তারপর সেগুলো বিভিন্ন আকৃতির পাত হিসেবে প্যাকেজিং করা হয়। যা দেখে একজন সাধারণ শুল্ক কর্মচারী বা কর্মকর্তার মনে সহজে সন্দেহ জাগবে না। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দারা বিশেষ দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের বলে জিন্নাতের এই কৌশলও ধরে ফেলে। তিনি কোন প্রকার ব্যাগেজ ঘোষণা না দিয়ে দ্রুত গ্রিন চ্যানেল ত্যাগ করার সময় তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়।
এ সময় তার কাছে কোন স্বর্ণবার আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। তার কাছে কোন স্বর্ণবার নেই বলে গোয়েন্দাদের বারবার জানান। এরপরই যাত্রীর সঙ্গে বহনকৃত দুটি লাগেজ স্ক্যানিং করে স্বর্ণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তার পাসপোর্ট অনুযায়ী তিনি চলতি বছরে ১৭ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। এতে ধারণা করা হচ্ছে তিনি পেশাদার সোনা পাচারকারী।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: