ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে জরিপ আতঙ্কে কয়েক শ’ ভূমিহীন ঈরিবার

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাউফলে জরিপ আতঙ্কে কয়েক শ’ ভূমিহীন ঈরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১০ সেপ্টেম্বর ॥ বাউফলের তেঁতুলিয়া নদী বেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের কয়েক শ’ ভূমিহীন পরিবার জরিপ আতঙ্কেদিন কাটাচ্ছে। জরিপের নামে ওই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম অন্য একটি ইউনিয়নের সঙ্গে সংযুক্ত করার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, প্রায় ১১ হাজার ৯১৫ লোকসংখ্যা নিয়ে ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন গেজেটভুক্ত হয়। এ ইউনিয়নে ১১টি মৌজা রয়েছে। ওই ইউনিয়নের ৬৯, ৭৪ এবং ১৪৬ জে এলএ প্রায় ১ হাজার একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭৯ সালে দিয়ারা জরিপের মাধ্যমে প্রায় ৬শ’ একর জমি ৪ শতাধিক ভূমিহীন পরিবারকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। কিন্তু ভূমি অফিসের অসহযোগিতার কারণে এখন পর্যন্ত ওই ভূমিহীন পরিবারগুলো তাদের নামে বন্দোবস্তকৃত জমির দলিল হাতে পায়নি। এনিয়ে দেনদরবার চলার ফাঁকে ১৯৯৩-৯৪ সালে বাউফলের নাজিরপুর ইউনিয়নের কাদের মোল্লার ছেলে হাফিজুর রহমান প্রকৃত ভূমিহীনদের বাদ দিয়ে নিজ নামসহ আত্মীয়-স্বজন, চাকুরিজীবী, নাবালক, ব্যবসায়ি ও বেনামে ৩শ’ ২০ একর জমি বন্দোবস্ত নেন। ওই সময় ভূমিহীনরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ১৯৯৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক অবৈধ বন্দোবস্ত বাতিলের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাফিজুর রহমানের লোকজন বাউফল সহকারী জজ আদালতে ১০১/৯৮ দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। যা ২০০৪ সালের ১৫ মে খারিজ হয়ে যায়। এরপর জেলা প্রশাসন যাচাই বাছাই করে প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে জমি বন্দোবস্ত দেন। কিন্তু ওই সব ভূমিহীনরা যাতে জমি ভোগ দখল করতে না পারেন সেজন্য মামলায় পরাজিত চক্রটি নানা অপতৎপরতা শুরু করলে প্রকৃত ভূমিহীনদের পক্ষে পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতে একটি মামলা রজু করা হয়। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। কিন্তু এ মামলাটি নিষ্পত্তির আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি জরিপকারী দল ওই চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর কচুয়া ও চর ধানদী গ্রামে জরিপ কাজ শুরু করেছেন। নতুন করে এ জরিপের ফলে ওই গ্রামের কয়েক শ’ ভূমিহীন পরিবার শংকিত হয়ে পড়েছেন। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা অভিযোগ করেন, একটি মহল মানচিত্র থেকে তার ইউনিয়নটি ছোট করতে জরিপকারী দলকে প্রভাবিত করে তার ইউনিয়নের ৬৯, ৭৪ এবং ১৪৬ জেএলের প্রায় ২ থেকে আড়াই হাজার একর জমির কর্তন করে পার্শ্ববর্তী একটি ইউনিয়নের সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা করছেন। এটা করা হলে তার ইউনিয়নের আয়তন ও লোকসংখ্যা কমে যাবে। এ বিষয়ে জরিপকারী দলের সদস্য নূরে আলম বলেন, আমরা সরকারী আদেশ বলে জরিপ করছি। জমি নিয়ে আদালতে মামলা-মোকদ্দমা চলমান থাকলেও জরিপ কাজে প্রভাব পরবে না।
×