ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্টিফেন্সের গৌরবময় শিরোপা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

স্টিফেন্সের গৌরবময় শিরোপা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এখন তিনি বিশ্বের ৮৩ নম্বর র‌্যাঙ্কিংধারী টেনিস খেলোয়াড়। সেজন্য হয়তো অবিশ্বাস্যই মনে হবে তার ইউএস ওপেন জয় করা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সেøায়ান স্টিফেন্স নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন অনেক আগেই, ৪ বছর আগে ছিলেন বিশ্বের ১১ নম্বর তারকা। তবে সে সময় জিততে পারেননি কিছুই। এবার ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম হিসেবে এ কৃষ্ণাঙ্গ তরুণী জিতলেন ইউএস ওপেনের শিরোপা। ফাইনালে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ম্যাডিসন কেইস। তার বিরুদ্ধে ১ ঘণ্টার মাত্র কিছু বেশি সময় নিয়ে তিনি জয় তুলে নেন ৬-৩, ৬-০ ব্যবধানে। অথচ এ বছর জানুয়ারিতেই তার বাঁ পায়ে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল। উইম্বলডন দিয়েই আবার কোর্টে ফিরেছিলেন। নিজের পারফর্মেন্স নিয়ে সংগ্রাম করার কথা, সেখানে বাজিমাত করলেন গ্র্যান্ডসøাম জিতে। জিতলেন ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার প্রাইজমানি। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই ‘সেরেনা জুনিয়র’ হিসেবে নাম কামিয়েছিলেন। সেটা ৪ বছর আগের কথা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে ওঠেন এবং সেই পথে তিনি হারিয়ে দেন বিশ্বসেরা সেরেনা উইলিয়ামসকে। কিন্তু ‘ছোট সেরেনা’ সেøায়ানে স্টিফেন্সকে পরের বছর থেকে আর তেমন খুঁজে পাওয়া যায়নি। ২০১৩ সালটা দারুণ কেটেছিল স্টিফেন্সের। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমি খেলার পর সে বছরই উইম্বলডনে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠেন তিনি, ফ্রেঞ্চ ওপেনের চতুর্থ রাউন্ড। এ তিনটি গ্র্যান্ডসøাম আসরে নিজেকে এত ভালভাবে মেলে ধরার কারণেই র‌্যাঙ্কিংয়ে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে স্টিফেন্সের, উঠে আসেন ১১ নম্বরে। পরের বছরটাতেই ছন্দপতন, একের পর এক ব্যর্থতায় পর্যবসিত হন তিনি। পরের বছর অবশ্য মোটামুটি ভালভাবেই ফিরেছিলেন। ক্যারিয়ারের প্রথম ডব্লিউটিএ শিরোপা জয় করেন। গত বছর ৩টি ডব্লিউটিএ শিরোপা জিতে নিজেকে আবার ভালভাবে ফিরে পাওয়ার অবস্থায় নিয়ে যান তিনি। গত বছর ২৬ আগস্ট পায়ের ইনজুরির কারণে ইউএস ওপেন থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। সেটা নিয়ে ভুগতে ভুগতে এ বছর জানুয়ারিতে শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচারই করতে হয় তাকে। ইনজুরির কারণে যখন নিজেকে কোর্ট থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তখন র‌্যাঙ্কিং ছিল ৩৬। ১১ মাস পর এ বছর জুলাইয়ে যখন ফিরলেন তখন বিশ্বের ৯৫৭ নম্বর খেলোয়াড় স্টিফেন্স। যেন ইউএস ওপেনের জন্যই অপেক্ষা করছিলেন ২৪ বছর বয়সী এ কৃষ্ণ তারকা। যেন সেরেনার অভাবটাই পূরণ করতে নেমেছিলেন এবার। সেমিফাইনালে ভেনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে দেয়ার পরই শিরোপার অন্যতম ফেবারিট হয়ে যান তিনি। এর আগে পর্যন্ত বিবেচনাটা কেউ করেননি। তবে প্রতিপক্ষ ম্যাডিসন সাম্প্রতিক সময়ে আছেন দারুণ ফর্মে। ১৬ নম্বর এই তারকার খুব ভাল বন্ধু স্টিফেন্সের। আর্থার এ্যাশ স্টেডিয়ামে লড়াইটা হলো মাত্র ৬১ মিনিটের। ম্যাডিসনকে উড়িয়ে দিলেন স্টিফেন্স। ম্যাডিসন এই টুর্নামেন্টে এবার ৩৪টি এসেস জিতেছিলেন। কিন্তু ফাইনালে সেই বিধ্বংসী রূপ দেখা যায়নি তার, মাত্র ৩টি এসেস জিততে সক্ষম হন। সবমিলিয়ে ৩০টি আনফোর্সড এররও করেন। লড়াই হয়েছে দুই ইনজুরি ফেরত তারকার মধ্যে। আশ্চর্যজনকভাবে তারা আবার পরস্পরের স্বদেশী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। স্টিফেন্স দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে জুলাইয়ে ফেরেন আর একই মাসে ২২ বছর বয়সী ম্যাডিসন দ্বিতীয়বারের মতো বাঁ হাতের কব্জিতে অস্ত্রোপচার করান। এরপর ফিরে এসেই স্ট্যানফোর্ডে শিরোপা জেতেন ম্যাডিসন। কিন্তু এবার পারলেন না স্টিফেন্সের কাছে। তবে রানার্সআপ হিসেবেও ১৮ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি পেয়েছেন তিনি প্রাইজমানি হিসেবে। এ বিষয়ে স্টিফেন্স বলেন, ‘তারজন্য খারাপ? সেও তো ফাইনালে উঠেছে। আপনারা কি দেখেননি তার নামে কত টাকার চেক ইস্যু হয়েছে? আমি নিশ্চিত সে খুবই ভাল বোধ করছে।’ এ বছর আগস্ট পর্যন্ত স্টিফেন্সের আয় ছিল মাত্র ৩ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। এবার শুধু ইউএস ওপেন জিতেই তার প্রায় ১২ গুণ আয় করলেন প্রাইজমানি থেকে। আর এটা আরও বেশি মেজর শিরোপা জয়ে তাকে উদগ্র করে তুলবে।
×