ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয় ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করার নির্দেশ

জালিয়াতি বন্ধে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য চেক ছাপাতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

জালিয়াতি বন্ধে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য চেক ছাপাতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ উন্নত প্রযুক্তির এমআইসিআর চেক প্রচলনের পরও ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিমাসেই ২০ থেকে ২৫টি চেক জালিয়াতির অভিযোগ আসছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র চেক জালিয়াতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এটি বন্ধে ছাপানোর সময় নির্ধারিত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলো নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির। এছাড়া নিরক্ষর মানুষেরা চেকের মাধ্যমে লেনদেনের সুযোগ পায় সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়। রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ব্যাংকার্স সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এস কে সুর চৌধুরী, এস এম মনিরুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহিম, শুভঙ্কর সাহা, এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনিস এ খানসহ প্রায় সব ব্যাংকের এমডিরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র আরও জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং খাতে চেক জালিয়াতির ঘটনা হঠাৎ বেড়ে গেছে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চেক জালিয়াতিসংক্রান্ত অভিযোগ ছিল ২০৯টি। আর এবার প্রতি মাসেই ২০ থেকে ২৫টি চেক জালিয়াতিসংক্রান্ত অভিযোগ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা পড়েছে। গ্রাহকের চেকের বইয়ের পাতা হুবহু নকল কিভাবে করে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের তদন্তে চেক জালিয়াতির সঙ্গে চেক প্রস্তুতকারী কিছু কোম্পানির লোকজন জড়িত থাকতে পারে বলে তাদের কাছে মনে হয়েছে। আর এ কাজে সহযোগিতা করছে ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। বিভিন্ন সময়ে তদন্তে এর সত্যতাও মিলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সাধারণ চেকের জালিয়াতি ঠেকানো ও লেনদেনে গতি আনতে ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রিকগনিশন (এমআইসিআর) নামের আধুনিক চেক বাংলাদেশে চালু করা হয় ২০০৯ সালে। তবে ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে তা সব ব্যাংকের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়। এ চেকের নির্ধারিত কিছু নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেগুলো পরিবর্তন ও নকল করা প্রায় অসম্ভব। চেক ছাপানোর সময় এই নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলো সঠিকভাবে চেকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে কিনা তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এটি করা গেলে চেকের মাধ্যমে জালিয়াতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এছাড়া যারা স্বাক্ষর করতে পারেন না সেই সব নিরক্ষর ব্যক্তি কিভাবে চেকের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারেন সেই বিষয়ে আলোচনা হয় ব্যাংকার্স সভায়। বৈঠক শেষে এবিবির চেয়ারম্যান আনিস এ খান সাংবাদিকদের বলেন, খেলাপী ঋণ শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন গবর্নর। এছাড়া ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয় ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করতে বারণ করা হয়েছে। তাই এখন থেকে যে কোন বিষয় বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ঋণ বিকেন্দ্রীকরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপকে একচেটিয়া ঋণ দিলে তাতে খেলাপী হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। এছাড়া ভোক্তা ঋণে আরও সাবধানতা বজায় রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকার্স সভায় ইরানের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
×