ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে তা ইতিহাসে বিরল ॥ আমু

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে তা ইতিহাসে বিরল ॥ আমু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনাকে ক্যাপিটালাইজ (পুঁজি) করে বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। রবিবার দেশবন্ধু ফুড এবং বেভারেজ লিমিটেডের বাণিজ্যিক উৎপাদন উদ্বোধনকালে নরসিংদীর পলাশে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির কারখানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, আজকে মিয়ানমারে মানবতা বলতে কিছু নেই। সেখানে মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করে একদিনের শিশুকেও হত্যা করা থেকে রেহায় দেয়া হচ্ছে না। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নির্বিশেষে হত্যার শিকার হচ্ছে। যেভাবে নারীদের নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। মিয়ানমারের ঘটনার সঙ্গে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের মিল রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের শুধু মনে পড়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদররা যেভাবে আমাদের দেশে নির্যাতন করেছিল। ‘মা-বোনের সম্ভ্রমহানিসহ ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়। এ দেশে গ্রাম-গঞ্জ পুড়িযে ছারখার করে দিয়েছিল। তেমনি একটি অবস্থা আজকে মিয়ানমারে সৃষ্টি করা হয়েছে। বিশ্বমানবতার কাছে আমাদের পক্ষ থেকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকার সমস্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ইতোমধ্যে আমরা কিছুটা সাড়া পেয়েছি’ বলেন আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, আমাদের দেশ আয়তনে ছোট, জনসংখ্যা বেশি। তারপরও কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা মিয়ানমারের নির্যাতিতদের আশ্রয় দিচ্ছি। তাদের খাদ্য থেকে শুরু করে সব রকম সুযোগ-সুবিধায় কোন কার্পণ্য করা হচ্ছে না। আমরা সারা বিশ্ববিবেককে চেষ্টা করছি, যাতে মিয়ানমার থেকে বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে তাদের (নির্যাতিত রোহিঙ্গা) পুনর্বাসিত করা হোক। ওই খানে তাদের (মিয়ানমারে) পুনর্বাসনের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা করা হচ্ছে। আজকে এটাকে ক্যাপিটালাইজ করার সুযোগ নেই। এটা দেশের অভ্যন্তরীণ কোন বিষয় নয়। এটিকে পুঁজি করে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়া ঠিক নয়। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে আমু বলেন, আজকে আমরাও তো বলতে পারি আপনাদের নেত্রী ওই লন্ডনে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র না করে তিনি যদি মিয়ানমারের কথা বলত তাহলে আপনারা যেটা বলছেন, সেটা আপনাদের মুখে শোভা পেত। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, আপনাদের নেত্রী লন্ডনে বসে এমন কোন প্রচেষ্টা চালাননি, এমন কোন বক্তব্য দেননি, যেটা মিয়ানমারের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে যায়। শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, আপনারা সেটাকে সমালোচনা করছেন। এখানে সমালোচনার কি আছে। এটা অন্য একটি দেশের ঘটনা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় তারা। ‘অনেক প্রচেষ্টা আপনারা চালিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য অনেক আন্দোলন করেছেন। নির্বাচন বাঞ্ছালের জন্য শতাধিক স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছেন। শত শত মানুষ পেট্রোলবোমা মেরে হত্যা করেছেন। গাছ কেটে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তারপরও আপনাদের কোন প্রচেষ্টা সফল হয়নি। এই সমস্ত অপচেষ্টা, অপপ্রচার করে কোন লাভ হবে না। আজকে দেশের স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ বলেন আমির হোসেন আমু। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান, সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান, সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান, দেশবন্ধু গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান।
×