ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত ও চীনে যান ॥ প্রধানমন্ত্রীকে ফখরুল

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত ও চীনে যান ॥ প্রধানমন্ত্রীকে ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ও চীন সফর করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার দুপুরে বিএনপির ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহিলা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ভারত ও চীন মিয়ানমারকে সমর্থন দিচ্ছে। তাই ভারত ও চীনকে বোঝাতে হবে যে, রোহিঙ্গা সমস্যা ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে। তাই মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ঠিক হবে না। কূটনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। আর প্রধানমন্ত্রীকে শুধু ভারত ও চীন সফর করলেই হবে না, এর পাশাপাশি সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুততার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সরকারকে বিশ্বব্যাপী জোরদার কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে অন্যান্য দেশেও যেতে হবে। ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছে। তারা বলছে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নাকি অস্ত্র ও জঙ্গী আসছে। যা আমাদেরও উৎকণ্ঠিত ও আতঙ্কিত করছে। তিনি বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পরেছে। যেভাবেই হোক কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো আর কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। যে সরকার নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ হতে হবে। তিনি বলেন, দেশের সঙ্কট নিরসনে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেদিকে যেতে রাজি নয়। আমরা নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচনে ভয় পাই না। আওয়ামী লীগ ভাল করেই জানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ক্ষমতায় যেতে পারবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে এমনি এক পরিস্থিতিতে জিয়াউর রহমান সময়োপযোগী কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সে সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক চুক্তিতে সই করে ছিলেন। সেখানে উল্লেখ ছিল এই চুক্তির আলোকে ভবিষ্যতেও মিয়ানমার তার নাগরিকদের ফেরত নিতে বাধ্য থাকবে। তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বিশ্ব সম্প্রদায়সহ সব বিবেকবান মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক নূরে আরা সাফা, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ঢাকা জেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক সাবিনা ইয়াসমিন, সংগঠনের নেতা রওশন আরা ফরিদ, জেলী চৌধুরী রহিমা শরীফ প্রমুখ। রোহিঙ্গাদের সাহায্য-সহযোগিতা করতে বিদেশ থেকে যেসব দূত আসছে তাদের নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিয়ানমারে গণহত্যার প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দুদু বলেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া সরকারের প্রতি অনেক আগেই আহ্বান জানিয়েছিলেন অসহায় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসতে দিন, তাদের আশ্রয় দিন। পরে জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপে বাধ্য হয়ে সরকার রোহিঙ্গাদের ঢুকতে দিয়েছে। আমরা তারপরও দেখেছি এসব মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করেছে। পানির মধ্যে, খোলা আকাশে বসবাস করছে। তাদের মাথায় কোন ছাউনি নেই, খাবার নেই, ওষুধ নেই, তাদের আশ্রয়স্থল নেই। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আমরা ড. ইউনূসকে ব্যবহার করতে পারতাম। কিন্তু সরকারীভাবে তাকে ব্যবহার করা হয়নি। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ড. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দীন আহমেদ, কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তামান্না ও আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব আ.স.ম মোস্তফা কামাল।
×