ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারের নয়, জনগণের শর্তে নির্বাচন হতে হবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সরকারের নয়, জনগণের শর্তে নির্বাচন হতে হবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে সহায়ক সরকারের দাবি আদায় করে নিতে হবে। আর এর মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শনিবার বিকেলে বিএনপির ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি এখন কঠিন দুঃসময় পার করছে। নেতাকর্মীরা বিপদগ্রস্ত, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের শিকার। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, সাহস ও শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসুন, ফ্যাসিস্ট ও অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বর্তমান সরকারের শর্তে নয়, জনগণের শর্তে নির্বাচন হতে হবে। ফখরুল বলেন, বিএনপির জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে দলের নেতাকর্মীদের সভা-সমাবেশ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সভা-সমাবেশ এমনকি মানববন্ধনও করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আওয়ালী লীগ জানে, বিএনপি সভা-সমাবেশ করলে, রাস্তায় নামলে পরবর্তী নির্বাচনে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। বিএনপি জনগণের দল। বারবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করেছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণের রায় নিয়ে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় যাবে। আর এটি বুঝতে পেরেও বিএনপির বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নোংরা রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগই নোংরা রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন, সংবাদপত্রে স্বাধীনতা হরণ, জরুরী আইন জারি করে আওয়ামী লীগ। বিএনপি একটি উদারপন্থী, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বিএনপিতে সাম্প্রদায়িকতার লেশমাত্র নেই। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব সকল নাগরিকের জন্য অত্যন্ত জরুরী। পরিবর্তনশীল ইতিহাস ও সাম্প্রতিক জীবন অভিজ্ঞতা আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে, ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত গণ প্রচেষ্টা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে। স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের অতন্দ্র প্রহরী হচ্ছে গণঐক্য। ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু সরকার নড়াচড়া করার আগে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চলে এসেছেন। এটা দেশের জন্য লজ্জাজনক। তবে এখন সরকার কিছুটা নড়াচড়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি মানবতার পক্ষে কথা বলছে। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, দেশে যখন রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করেছিল এবং জনগণ দিশেহারা ছিল সেই সময়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উত্থান হয়েছিল একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে। জিয়াউর রহমানের উত্থান হয়েছে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে যিনি জাতির সামনে নতুন এক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নানা অজুহাতে বিএনপিকে আবারও নির্বাচনের বাইরে রাখতে চায়। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ড. মোশাররফ বলেন, আগামী নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মত হবে না, হতে দেয়া হবে না। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া চিক্যিৎসা শেষে দেশে ফিরে সময় মতো সহায়ক সরকারের রূপরেখে দেবেন। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ।
×