ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের হাসপাতালেই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দেশের হাসপাতালেই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রধানমন্ত্রীর

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গাজীপুরের কাশিমপুরে ২৫০ শয্যার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজের মায়ের নামে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ হাসপাতালে দেড় বছর আগেও চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন তিনি। শনিবার সকালে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও। শনিবার সকাল ৮টার দিকে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে হাসপাতালটিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বিশেষায়িত হাসপাতালটির ভিজিটিং কনসালটেন্ট এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিইও জাইতুন বিনতি সুলাইমানসহ অন্য চিকিৎসকরা তাকে স্বাগত জানান। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দেশের খ্যাতনামা ইএনটি চিকিৎসক ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত জনকণ্ঠকে জানান, রুটিন কিছু শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রক্ত, আল্ট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রের মতো নিয়মিত কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। তিনি সম্পূর্ণ ভাল আছেন এবং কোন অসুস্থতা নেই তার। হাসপাতালের ভিজিটিং কনসালটেন্ট প্রাণ গোপাল দত্ত আরও বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সব সময় বাংলাদেশী ডাক্তারদের কাছে চিকিৎসা নিতে চান। বাংলাদেশের ডাক্তারদের প্রতি তার আস্থা আছে।’ হাসপাতালটির অন্য চিকিৎসকরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে গিয়ে একজন সাধারণ রোগীর মতোই টিকেট কেনা থেকে শুরু করে সব আনুষ্ঠানিকতা সারেন। খালি পেটে রক্ত দিয়ে হাসপাতালেই নাস্তা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ হাসপাতালে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবস্থানের সময় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা হাসপাতালের চিকিৎসক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নানা অভিযোগ, অনুযোগ ও অনুরোধ শোনেন এবং তাৎক্ষণিক কিছু সমস্যার সমাধানও দেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে হাসপাতালে যাতে রোগীরা আরও আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন সে বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবিও তোলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেনÑ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিইও জাইতুন বিনতি সুলাইমান, মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ রাজীব হাসানসহ অন্য চিকিৎসকরা। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই চিকিৎসার জন্য প্রতি বছর ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে যান। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দেড় বছরে দেশের হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছেন। দেড় বছর আগেও হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমি যদি কখনও অসুস্থ হয়ে পড়ি তাহলে আপনারা আমাকে বিদেশে নেবেন না। এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে ওঠাবেন না। আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নেব। এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেব।’ উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ নবেম্বর মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান কেপিজের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে গাজীপুরের নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশের এ বিশেষায়িত হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। এর নামকরণ হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা। বিশেষায়িত এ হাসপাতালটি এ বছরের মধ্যে বিশ্বের অন্যান্য নামীদামী হাসপাতালের ন্যায় আইএমএস (ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) লাইসেন্স পেতে যাচ্ছে, যা রোগীদের কাছে আরও অধিকতর আস্থাভাজন করে তুলবে হাসপাতালটি। হাসপাতালটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, দেশখ্যাত বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়মিত রোগী দেখেন। এমনকি মালয়েশিয়ার বিখ্যাত চিকিৎসকরাও বসেন এখানে। ইতোমধ্যে হাসপাতালটি রোগীদের কাছে আস্থা অর্জন করেছে।
×