ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতি বছর ৫০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে

আমদানির শীর্ষে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, শাওমি ॥ স্মার্টফোনের বাজার দখলে চলছে প্রতিযোগিতা

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আমদানির শীর্ষে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, শাওমি ॥ স্মার্টফোনের বাজার দখলে চলছে প্রতিযোগিতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের স্মার্টফোনের বাজার দখলে এক ধরনের লড়াই চলছে ব্র্যান্ড স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে। বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) বাজারে স্মার্টফোনের বিক্রি বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির ধারায় রয়েছে মোট স্মার্টফোনের বিক্রির পরিমাণ (পিস হিসাবে) এবং টাকার দিক দিয়েও। বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈধ পথে (আমদানি করা) দেশে আসা স্মার্টফোনের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে দারুণ একটা লড়াই দেখা যাচ্ছে। লড়াইয়ে শীর্ষে রয়েছে স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন। অন্যদিকে, নতুন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে উঠে আসছে শাওমি। বিক্রির পরিমাণ ও টাকার হিসাবে দুটি ব্র্যান্ডের অবস্থানই ঈর্ষণীয় বলে বিভিন্ন নথি দেখে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্যামসাং মোবাইল ফোনের অন্যতম পরিবেশক ফেয়ার ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, ‘মানুষের রুচিতে পরিবর্তন এসেছে। সৌখিনতাও বেড়েছে। ফলে মানুষ চাহিদার সঙ্গে রুচি ও সৌখিনতার সমন্বয়ে এখন মোবাইল ফোন কিনছেন। এ কারণে স্মার্টফোনের বাজার বড় হচ্ছে।’ সম্প্রতি স্মার্টফোন আমদানির একটি নথি থেকে জানা গেছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে আমদানি হয়েছে মোট ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৮ পিস স্মার্টফোন। এর মধ্যে ১০ হাজার টাকার বেশি দামের রয়েছে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১১১ পিস। অন্যদিকে ১০ হাজার টাকার নিচে রয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ পিস স্মার্টফোন। এসব ফোনের মোট বাজার মূল্য ৭৫৫ কোটি ৮২ লাখ ২৬ হাজার ১৫৩ টাকা। অন্যদিকে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশে স্মার্টফোন আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৭ পিস। যার মধ্যে ১০ হাজার টাকার বেশি দামের স্মার্টফোন রয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার ৮৪৩ পিস। আর ১০ হাজার টাকার কম দামের স্মার্টফোনের সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪৪ পিস। এসব ফোনের মোট বাজারমূল্য ৮৭৫ কোটি ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৯ টাকা। দেখা গেছে, প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১০ হাজার টাকার নিচের দামের স্মার্টফোনের চাহিদা কমেছে। বেশি সুবিধা সম্পন্ন নতুন নতুন মডেলের স্মার্টফোনের দাম বেশি হলেও সেদিকে ঝুঁকেছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে ঈদ-উল-ফিতরের আগে স্মার্টফোনের চাহিদা বেড়ে যায় বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক জানান, গত ঈদের আগে স্মার্টফোনের চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল। মানুষ এখন ঈদের কেনাকাটায় স্মার্টফোন অন্তর্ভুক্ত করায় বিক্রি বেড়েছে বলে তিনি মনে করেন। স্মার্টফোন আমদানির একটি নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রথম প্রান্তিকে স্মার্টফোন সেট হিসেবে আমদানির শীর্ষে রয়েছে স্যামসাং। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে হুয়াওয়ে, সিম্ফনি, অপো, লাভা, শাওমি ইত্যাদি। দ্বিতীয় প্রান্তিকের শীর্ষে রয়েছে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, সিম্ফনি, অপো, লাভা, শাওমি ইত্যাদি। টাকার অংকে (বিক্রয়কৃত অর্থ) শীর্ষে ছিল প্রথম প্রান্তিকে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, সিম্ফনি, অপো, লাভা এবং শাওমি। দ্বিতীয় প্রান্তিকে শীর্ষে রয়েছে স্যামসাং, অপো, হুয়াওয়ে, সিম্ফনি, শাওমি ও লাভা। এরপরই রয়েছে আরেকটি দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। বিএমপিআইএর হিসাব অনুযায়ী ২০১৬ সালে ৩ কোটি ১০ লাখ মোবাইল ফোন দেশে আমদানি হয়েছে, যার ৮২ লাখই স্মার্টফোন। সংগঠনটির দাবি, প্রতি বছর অবৈধ বা চোরাই পথে প্রায় ৫০ লাখ মোবাইল ফোন দেশে ঢুকছে, যাকে বলা হচ্ছে গ্রে মার্কেট।
×