ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফের মুনাফায় ফিরেছে আরএন স্পিনিং

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ফের মুনাফায় ফিরেছে আরএন স্পিনিং

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে বহুল আলোচিত বস্ত্র খাতের কোম্পানি আরএন স্পিনিং মিলস লিমিটেড পর পর দুই বছর লোকসানে থাকার পর ফের মুনাফায় ফিরেছে। উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার কেলেঙ্কারি, দফায় দফায় জরিমানা, বার বার আদালতে বিচরণ ছাড়াও মুনাফায় উত্থান-পতনের রেকর্ডও কোম্পানিটির অন্যতম অনুষঙ্গ। কোম্পানি জানায়, চলতি বছরের মার্চে নতুন কটন ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ায় কোম্পানির উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে আগের বছরগুলোতে লোকসানে থাকলেও এবার মুনাফায় ফিরেছে কোম্পানিটি। আরএন স্পিনিংয়ের কোম্পানি সচিব মোঃ হান্নান মোল্লা জানান, নতুন কটন ইউনিটের পণ্যের চাহিদা ভাল। পাশাপাশি এ্যাক্রেলিক সুতার চাহিদাও বাড়ছে। সবমিলে কোম্পানির রফতানি আগের বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে, যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে বিক্রি ও মুনাফায়। কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৬-১৭ হিসাব বছরে আরএন স্পিনিংয়ের নিট মুনাফা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ১ পয়সা। যেখানে এর আগের ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে কোম্পানিটি ২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা লোকসানে ছিল। সে সময়ে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা লোকসান হয়েছিল, বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর যা ১ টাকা ৪ পয়সায় দাঁড়ায়। উল্লেখ্য, তালিকাভুক্তির পর কোন বছরই শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। এদিকে মার্চে নতুন ইউনিট চালুর প্রভাবে আলোচ্য হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানির বিক্রি ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময়ে এক বছর আগের তুলনায় কোম্পানির বিক্রি ৬৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। ফলে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৪ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ১২ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল। তবে প্রথমার্ধে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লোকসানের কারণে হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানির মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকায়। কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরেই বিশ্বব্যাপী এ্যাক্রেলিক সুতার চাহিদা নিম্নমুখী। বাংলাদেশের তুলনায় চীন ও ভিয়েতনামের পণ্যের দিকে বেশি ঝুঁকছেন ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতারা। ফলে জোর প্রচেষ্টা চালিয়েও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, এ্যাক্রেলিক পণ্য রফতানি করতে পারছিল না আরএন স্পিনিং। এ পরিস্থিতিতে ২০১৫ সালের অক্টোবরে কটন সুতা উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে কারখানা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে কোম্পানি। ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সম্প্রসারণ প্রকল্পে ৬৫ কোটি টাকা কোম্পানির নিজস্ব তহবিল থেকে এবং ৩৫ কোটি টাকা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। নতুন ইউনিটে উৎপাদন চালুর ফলে কোম্পানির দৈনিক সুতা উৎপাদন সক্ষমতা ১১ হাজার কেজি থেকে ২২ হাজার কেজিতে উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরএন স্পিনিংয়ের অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভ ২৪৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ১২ দশমিক ৭৭ ও বাকি ৫০ দশমিক ৫৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
×