ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাপার সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঢাকার ২০ আসনে নির্বাচনী প্রচারে

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

জাপার সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঢাকার  ২০ আসনে নির্বাচনী  প্রচারে

রাজন ভট্টাচার্য ॥ যোগ্য প্রার্থী সঙ্কটের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকার ২০টি আসনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা কাজ শুরু করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচীতে যোগ দিচ্ছেন প্রার্থীরা। দলের পক্ষ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে মাঠে নামার কথা জানান তারা। যদিও ঢাকার বেশিরভাগ আসন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দখলে। তাই ক্ষমতাসীন দলের দুর্গে হানা দিতে চায় আওয়ামী লীগের গৃহপালিত দল এরশাদের জাতীয় পার্টি। আগামী নির্বাচনে ঢাকার অন্তত পাঁচ থেকে আটটি আসন চায় জাপা। যে প্রক্রিয়াতেই নির্বাচন হোক ঢাকার আসন বাড়াতে এরশাদ নিজেই দেন-দরবার করবেন। নিজেও প্রার্থী হবেন ঢাকা-১৭ আসনে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১ আসনে এ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, ঢাকা-৪ আসনে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও ঢাকা-৬ আসনে কাজী ফিরোজ রশীদ জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। বাকি ১৭টি আসনেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দখলে। যদিও ২০০৮ সালের নির্বাচনে গুলশান এলাকা থেকে পাস করেছিলেন জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ। ২০১৪ সালে এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলে রংপুরের আসন রেখে ঢাকা-১৭-সহ অন্যান্য আসনের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়। এতে গুলশানের আসনটি শেষ পর্যন্ত পার্টির হাতছাড়া হয়ে যায়। জাপার শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে দলের অবস্থান আরও জোরদার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজন নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া। তাই ঢাকার আসনগুলোর জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাজ শুরু করতে দলের পক্ষ থেকে গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তারা কাজও শুরু করেছেন। জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মিলন বলেন, ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাজ শুরু করতে ইতোমধ্যে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ঢাকার আসনগুলোকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় দলের প্রার্থীরা বেশি আসন পেলে সারাদেশে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টায় মাঠে নেমেছেন। আশা করি, নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ইতিবাচক ফল পাবে। ঢাকায় জাপা যোগ্য প্রার্থী সঙ্কটের কথা জাতীয় পার্টির কোন নেতা স্বীকার না করলেও দলীয়প্রধান এরশাদের টার্গেট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্মানজনক সংসদীয় আসনে নিজ দলের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করা। আসনগুলো হলো- ঢাকা-১৭, ঢাকা-১, ঢাকা-৪, ঢাকা-৫, ঢাকা-৬ ও ঢাকা-১৩। এর মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনের এরশাদ নিজে ও ঢাকা-১৩ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে আবারও মহাজোট গঠন করা হবে। ১৪ দল তথা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে। বিএনপি কোন কারণে নির্বাচন থেকে দূরে থাকলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে প্রার্থী দেয়া হবে। সে অনুযায়ী হবে আসন ভাগাভাগি। এর মধ্য দিয়ে শক্তিশালী বিরোধী দলের আসনে বসতে চায় জাপা। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের কাছে শতাধিক আসন চেয়ে তালিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী রয়েছেন ৭০ জন। বাকি ৩০ জন হলো এরশাদের রাজনৈতিক জোটের নেতারা। রোজার ঈদের আগে এ তালিকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের হাতে তুলে দেন এরশাদ। যদিও এখন ৪০ জন এমপি নিয়ে বিরোধী দল হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে জাতীয় পার্টি। প্রচারে ঢাকার প্রার্থীরা ॥ জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নিজ নিজ এলাকায় ব্যানার পোস্টার ফেস্টুন লাগিয়ে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। এর মধ্যে ঢাকা-২ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি হাজী মোঃ শাহজাহান, ঢাকা-৫ আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ। ইতোমধ্যে তিনি নিজ এলাকায় সামাজিক কর্মকা-ে নিয়মিত যোগ দিচ্ছেন। নিজ আসনের পক্ষ থেকে ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। মীর আবদুস সবুর আসুদ জনকণ্ঠকে জানান, নির্বাচন সামনে রেখে তিনি কাজ শুরু করেছেন। মানুষ জাতীয় পার্টির প্রতি দুর্বল। তারা চান আগামী নির্বাচনে এরশাদ ক্ষমতায় আসুক।
×