ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা সঙ্কট কোফি আনান কমিশনের সুপারিশের বাস্তবায়ন চায় ভারত

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা সঙ্কট কোফি আনান কমিশনের সুপারিশের বাস্তবায়ন চায় ভারত

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কোফি আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণ বাস্তবায়ন চায় ভারত। মিয়ানমারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় রাখাইন পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সে সময় মিয়ানমারের নেত্রী আউং সান সুচির সঙ্গে আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে জোর দেয় ভারত। দিল্লীর কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য জানায়। গত ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমার সফরকালে রাখাইন রাজ্যের অবস্থা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়। এ সময় মোদি রাখাইন রাজ্যের গুরুতর পরিস্থিতি সম্পর্কে তার উদ্বেগের কথা জানান। মিয়ানমার সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মিয়ানমারের নেতা আউং সান সুচি একমত হয়েছেন, রাখাইন রাজ্য ও তার দেশের মানুষের উন্নতির মধ্যেই সমস্যার সমাধান নিহিত। অবকাঠামো ও আর্থসামাজিক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে উন্নতি করা যায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, কমিউনিটির উন্নয়ন, ছোট সেতু নির্মাণ, সড়কের উন্নয়ন, ছোট ছোট বিদ্যুত প্রকল্প, জীবিকায়ন কর্মকান্ড প্রভৃতি কর্মকান্ডের মাধ্যমে এ উন্নয়ন সম্ভব। সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা নির্যাতনের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে মিয়ানমার যান। এ সফরে রাখাইন প্রদেশের সহিংসতা ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়েও দুই দেশের শীর্ষ নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে নিরাপত্তা ও মানবিকতার ইস্যুগুলোতেই উভয় নেতা রাখাইন অঞ্চলে সামাজিক উন্নয়নের ওপরও জোর দিয়েছেন। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ বিভাগের দায়িত্বে থাকা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সুপ্রিয়া রঙ্গনাথন ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারে সম্প্রতি যে সহিসংতা চলছে, তখনই ভারতের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সঠিক তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কোফি আনানের নেতৃত্বেও একটি কমিটি তাদের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন পেশ করেছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব সেখানে রয়েছে, সেগুলি মিয়াানমার গুরুত্ব দিয়েছে বিবেচনা করছে বলেই আমাদের তারা জানিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাখাইন প্রদেশের সমস্যার যেমন নিরাপত্তার দিকটি আছে, তেমনই রয়েছে মানবিকতার ইস্যু ও সামাজিক উন্নয়ন। কোন বিষয়ই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু ভারত চেষ্টা করছে ওই অঞ্চলের সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে সমস্যার সমাধানের। অনেকগুলি প্রকল্প ইতোমধ্যেই ওই অঞ্চলে চলছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমার সফরের সময় ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ, অবকাঠামো, বিদ্যুত ও সংস্কৃতির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলতি সহযোগিতার পরিধি আরও বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেন। তার সফর ওই দুই দেশের মধ্যে আরও গভীর সহযোগিতার রূপরেখা তৈরিতে সাহায্য করবে বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। মিয়ানমারের ওপর চীনের প্রভাব ঠেকানোও অন্যতম লক্ষ্য ছিল মোদির। কেননা মিয়ানমারের ওপর বরাবরই চীনের প্রভাব রয়েছে। এ প্রভাব খর্ব করতে চায় ভারত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সীমান্তে অবস্থিত মিয়ানমারকে পাশে চায় ভারত।
×