ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ॥ যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ॥ যুক্তরাষ্ট্র

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ যে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে, তার স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার নোয়ার্ট মিয়ানমারের সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি জানি, অন্য যে কোন দেশের মতোই, শরণার্থীদের ভার বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে জানিয়ে নোয়ার্ট বলেন, বার্মার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। খবর বিবিসি ও ইয়াহু নিউজ’র। গত ২৪ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ চেকপোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির হামলার পর সেখানে পাল্টা সেনা অভিযানের মুখে প্রতিদিনই রোহিঙ্গা মুসলিম দেশ ছাড়ছেন। ওই হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আর সহিংসতা না চালিয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র। রাখাইনে অস্থিরতা বাড়ে এমন কোন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নোয়ার্ট বলেন, আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে জরুরী মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য দ্রুত তাদের কাছে পৌঁছার সুযোগ করে দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আহ্বান রইল। বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে চলেছে। বাংলাদেশ সরকার তাদের ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে এলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। সর্বশেষ সপ্তাহ দুয়েক আগে হামলার ঘটনার পর শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জাতিসংঘের ধারণা। এদিকে দমন অভিযানের মুখে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের রক্ষা করা দূরে থাক তারা যে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে সে বিষয়ে মোটেই মুখ খুলছেন না মিয়ানমারের নেতা আউং সান সুচি। উপরন্তু রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ‘সন্ত্রাসীরা’ প্রচুর অসত্য তথ্য ও ভুয়া ছবি ছড়িয়ে দিচ্ছে তিনি দাবি করেছেন। এ কারণে পশ্চিমা বিশ্বে তার কড়া সমালোচনা হচ্ছে; এমনকি শান্তির জন্য পাওয়া তার নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেওয়ার দাবিও উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেন, জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় কাজ করছে। সহিংসতা বন্ধে ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে আমরা বার্মার প্রতিবেশী দেশগুলোসহ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। তবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা যুক্তরাষ্ট্র ভাবছে না বলে জানান নোয়ার্ট। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন আমরা কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি; সম্ভাব্য কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে এখনই আমি কোন মন্তব্য করতে পারছি না। হবে কি হবে না- কোনটাই বলতে পারছি না। মিয়ানমার এমন একটি দেশ যেখান থেকে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন মন্তব্য করে দেশটিতে সাংবাদিক ও বিভিন্ন দাতা সংস্থাকে দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানান। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এ বিষয়ে সুচিসহ কোন নেতার সঙ্গে এখনও কথা বলেননি।
×