ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের আন্তর্জাতিক আয়োজন ঢাকা ডকল্যাব

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের আন্তর্জাতিক আয়োজন ঢাকা ডকল্যাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক আয়োজনে যুক্ত হলো প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়া। দেশ ও বিদেশের তরুণ প্রজন্মের নির্মাতারা শিখবেন প্রামাণ্যচিত্র চিত্র নির্মাণের করণকৌশল। আর এই শিক্ষণ পর্বটি পরিচালনা করবেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের খ্যাতিমান প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতারা। সেই সঙ্গে এই নবীন নির্মাতারা পাবেন তাদের ছবিটির প্রযোজক ও বাজারজাতকরণের সুবিধা। আর এমন চমৎকার উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হলো ফিল্ম পিচ বা যৌথ প্রযোজনায় প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের বাজার বিষয়ক কর্মশালা। ‘প্রামাণ্যচিত্রের যৌথ প্রযোজনার কলাকৌশল ও যৌথ প্রযোজনার বাজার’ শীর্ষক এ কর্মশালার শিরোনাম ঢাকা ডকল্যাব। যার আয়োজন করেছে ঢাকা ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম নেটওয়ার্ক। দেশের তরুণ প্রজন্মের উঠতি ও ভবিষ্যত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সঙ্গে চলচ্চিত্রের আন্তর্জাতিক পরিম-লের একটি সংযোগ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে ছয় দিনের এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকার, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, কসমস ফাউন্ডেশন ও ওরিয়েন্টাল সার্ভিসেস লিমিটেড। শুক্রবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রামাণন্যচিত্র বিষয়ক এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। উদ্বোধনী আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন ইউসুফ এবং পরিচালক তারেক আহমেদ, এন রাশেদ চৌধুরী, ইমরান হোসেন কিরমানি, ভারতের নির্মাতা নীলোৎপল মজুমদার ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম নেটওয়ার্কের পরিচালক গওউসুল আলম শাওন। উদ্বোধনী বক্তব্যে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, চলচ্চিত্রের একটি বিশ^জনীন ভাষা আছে। সে কারণেই সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে চলচ্চিত্র। আর প্রামাণ্যচিত্র নিয়ে এই আয়োজনটি এদেশের চলচ্চিত্রের জন্য নতুন এক দিগন্ত খুলে দিল। উদীয়মান নির্মাতারা দারুণ উপকৃত হবেন এই কর্মশালার মাধ্যমে। বৃদ্ধি পাবে তাদের নির্মাণশৈলীর দক্ষতা। আগামী দিনের এই নির্মাতারা দেশের পাশাপাশি বিশ^ব্যাপী গজিয়ে ওঠা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে মানবিকতার কথা বলবে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। তুলে ধরবে সংকট ও সম্ভাবনার কথা। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রদর্শিত হয় কামরান আহমেদ সায়মন নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘আর ইউ লিসেনিং।’ কর্মশালার পাশাপাশি প্রতিদিনের সান্ধ্যকালীন আয়োজনে রয়েছে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। আজ শনিবার প্রদর্শিত হবে কিম ডং অউন নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘রিপ্যাট্রিয়েশন’। ১০ সেপ্টেম্বর দেখানো হবে একই নির্মাতার ডকুফিল্ম ‘জুং ইল-উ, মাই ফ্রেন্ড’। ১১ সেপ্টেম্বর দেখানো হবে অড্রিয়াস স্টোনিজের ‘ওমেন এ্যান্ড দ্য গ্লেসিয়ার।’ ১২ সেপ্টেম্বর প্রদর্শিত হবে ‘সিক্সটিনাইন মিনিটস অব এইটি সিক্স ডেইজ’। ১৩ সেপ্টেম্বর প্রদর্শিত হবে মিরোস্লাভ জ্যানেকের ‘নরমাল অটিস্টিক ফিল্ম।’ আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান ছয় দিনের এ আয়োজনে বাংলাদেশ ও ভারতের ২০ জন তরুণ ও উঠতি চলচ্চিত্র নির্মাতা অংশগ্রহণ করছেন। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ১৩ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা একটি করে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রকল্প জমা দিয়েছেন, যা দেশী-বিদেশী মেন্টরদের মাধ্যমে পিচিংয়ের উপযোগী করে তোলা হবে। এই প্রকল্পগুলোই পরবর্তীতে কর্মশালার শেষ দু’দিন ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর পিচিং সেশনে উপস্থাপন করবেন অংশগ্রহণকারীরা। চলচ্চিত্রের প্রকল্প জমা দেয়া ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতারা এই সমগ্র আয়োজনে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। ছয় দিনের এই কর্মশালা দুই অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশে অংশগ্রহণকারীরা সকলেই তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে ৩ দিনব্যাপী নিবিড় প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। কর্মশালার দেশী-বিদেশী মেন্টররা প্রত্যেকেই একেকটি গ্রুপে বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রশিক্ষক ও পরামর্শকের কাজ করবেন। এই আয়োজনের দ্বিতীয় ভাগেই মূলত যৌথ প্রযোজনা সংক্রান্ত পিচিংয়ের আয়োজন করা হবে। বাছাইকৃত ১৩ জন অংশগ্রহণকারী ইতোমধ্যেই যে প্রকল্পগুলো মেন্টরিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন, তা দেশী- বিদেশী প্রযোজক, টেলিভিশন সম্প্রচারক, কমিশনিং এডিটর, চলচ্চিত্র পরিবেশক, চলচ্চিত্র বাজার বিশেষজ্ঞ এবং সিনেমায় অর্থ লগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সামনে পিচিংয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন। শেষদিনে একটি সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সেরা প্রকল্পগুলোকে পুরস্কৃত করা হবে। এ আয়োজনে প্রশিক্ষক ও প্রযোজক অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়েছেন জাপানের রিয়োতা কোটানী, ডেনমার্কেও কামিলা নিয়েলসন, যুক্তরাজ্যেও জেন রে ও সিলভিয়া বেডনার্জ, দক্ষিণ কোরিয়ার কিম ডং উন, ডেনমার্কের চলচ্চিত্রকার ক্যারোলিনা লিভিন, পর্তুগালের চলচ্চিত্রকার গ্রাকা ক্যাস্টেনহেইরা, লিথুনিয়ার চলচ্চিত্রকার অদ্রিয়ুস স্টোনিস ও ভারতের চলচ্চিত্র শিক্ষক নীলোৎপল মজুমদার। আলিয়ঁসে চেলো-পিয়ানোর যুগলবন্দী যন্ত্রসঙ্গীতসন্ধ্যা চেলো ও পিয়ানোর সুমধুর সুরে সিক্ত হলো শ্রোতা। যুগলবন্দী এই যন্ত্রসঙ্গীতের আয়োজনটি রাঙিয়ে দিল রাজধানীর সঙ্গীতানুরাগীদের অন্তর। শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানম-ির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘চেলো-পিয়ানো-ওডিও ২’ শীর্ষক সঙ্গীত আয়োজন। ঘণ্টাব্যাপী এ আয়োজনে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করেন খ্যাতনামা চেলিস্ট ও আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার রেসিডেন্ট সঙ্গীতশিল্পী ফিলিপ হাজরা এবং রাশিয়ান পিয়ানোবাদক জুলিয়া ঈভদোকিমোভা। একক ও যৌথ উপস্থাপনায় ছিল নানা ধরনের সঙ্গীত। ছিল পশ্চিমা সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকারদের অমর সৃষ্টি। যার মধ্যে ছিল লুডউইগ ভ্যান বিথোভেনের ‘মিনুয়েট’, ক্যামিল সেন্ট-সায়েন্সের ‘দ্যা সোয়ান’, স্কুমানের ‘ট্রুমেরেই’ ইত্যাদি।
×