ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরূপ প্রভাব

কুয়াকাটায় রাখাইন পণ্য কেনায় পর্যটকের আগ্রহ কমেছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কুয়াকাটায় রাখাইন পণ্য কেনায় পর্যটকের আগ্রহ কমেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৭ সেপ্টেম্বর ॥ কুয়াকাটায় আগত পর্যটক-দর্শনার্থীরা রাখাইন (বার্মিজ) পণ্যসামগ্রী কেনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। মায়ানামারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনের প্রতিবাদ জানানোর জন্য রাখাইন পণ্য কেনায় অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন এখানে আসা পর্যটক-দর্শনার্থী। অন্তত অর্ধশত পর্যটক-দর্শনার্থী এমন মন্তব্য করেছেন। রাখাইনদের পণ্যসামগ্রী বিক্রির দুই শতাধিক দোকানে এখন এসব পণ্যের বেচাকেনা ৯০ শতাংশ কমে গেছে। বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত খোঁজখবর নিয়ে এসব খবরের সত্যতা পাওয়া গেছে। এমনকি রাখাইন নারীদের পরিচালিত ১৫ দোকানের অধিকাংশ বন্ধ দেখা গেছে। কুয়াকাটায় আসা পর্যটকের কেনাকাটার মধ্যে বার্মিজ (রাখাইন) পণ্য কেনেন না এমন কেউ নেই। কিন্তু এখন দেখা দিয়েছে ভিন্ন চিত্র। বিশেষ করে পর্যটকরা রাখাইনদের আচার, চকোলেট, সাবান, কাপড়সহ বিভিন্ন প্রসাধনী কিনে থাকেন। কিন্তু এই দুই দিনে রাখাইন পণ্য বেচাকেনার চরম বেহাল দশা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে রয়েছে প্রচার-প্রচারণা। কুয়াকাটার ঐতিহ্যবাহী শ্রী-মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের সামনে দোকান করেছেন মোঃ মিলন। ইত্যাদি ফ্যাশন নামের এ দোকানে গত চারদিনে কোন খদ্দের যায়নি। মিলনের দোকান বার্মিজ কিংবা রাখাইন পণ্যে পরিপূর্ণ। মিলনের মুখাবয়ব রাখাইনদের মতো হওয়ায় বর্তমানে তিনি বিপাকে রয়েছেন। পর্যটকরা ধারণা করেছেন ওই ব্যবসায়ী রাখাইন। বলে-কয়ে খদ্দের ভেড়াতে শুরু করেছেন। তবে পর্যটকরা তার দোকান থেকে কোন প্রকার বার্মিজ পণ্য সংগ্রহ করছে না বলে জানালেন। এমন অবস্থা কুয়াকাটা সৈকতে যাওয়ার সড়কের দুইদিকসহ ভুইয়া মার্কেট, রাখাইন মহিলা মার্কেট, বৌদ্ধবিহার মার্কেটের। বার্মিজ পণ্য বর্জনের নেতিবাচক প্রভাবে দুস্থ রাখাইন নারীদের পরিচালিত রাখাইন মহিলা মার্কেটের ১৫টি দোকানের মধ্যে নয়টি বন্ধ দেখা গেছে। অধিকাংশ ব্যবসায়ী তাদের ক্ষতির কথা স্বীকার করলেও পর্যটক-দর্শনার্থীর এমন সিদ্ধান্তে সমর্থন জানান। সৈকত লাগোয় বার্মিজ পণ্য বিক্রেতা জুলহাস, জুয়েল ও সুমনরা জানিয়েছেন, পর্যটকরা বার্মিজ পণ্যের কথা শুনলে কিনতে চায় না। রাজধানীর উত্তরা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক বহরে থাকা মা খাদিজা, বোন রোজি, মেয়ে সাইমা, সানজিদা ও ছেলে গালিবকে নিয়ে প্রতি বছরের মতো এবার ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় এসেছেন। খাদিজা জানান, ছেলে-মেয়েরা ফেসবুক বন্ধুদের রাখাইন পণ্য না কেনার অনুরোধে এসব কিনছে না। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে বার্মিজ সামগ্রী ক্রয় করে কুয়াকাটায় পাইকারি বিক্রয়কারীদের একজন জাকারিয়া জাহিদ বলেন, ওইসব পণ্যের চাহিদা অনেক কমে গেছে।
×