ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামালপুরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৭ জন আটক

ইউপি নির্বাচনের জেরে হামলা ॥ নিহত দুই, আহত ২০

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ইউপি নির্বাচনের জেরে হামলা ॥ নিহত দুই, আহত ২০

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ৭ সেপ্টেম্বর ॥ মাদারগঞ্জ উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় দুজন খুন এবং অন্ততপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং বাকিদের মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলার জোড়খালি ইউনিয়নের ফুলজোড় গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মাদারগঞ্জ থানা পুলিশ ফুলজোড় গ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। জানা গেছে, ইউপি নির্বাচন ও অন্যান্য গ্রাম্য বিরোধ নিয়ে জোড়খালি ইউনিয়ন শাখা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম ও তার লোকজনদের সঙ্গে একই শাখা যুবলীগের সহ-সম্পাদক শিহাব রানা ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এর জের ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো ঝগড়া হয়ে থাকে। তিন দিন আগে পুনরায় কথা কাটাকাটি হয়। প্রতিপক্ষরা বুধবার রাতে যুবলীগ নেতা শিহাব রানার সহোদর মাহবুবুর রহমানকে ছরিকাঘাত করে। তাকে রাতে মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ যুবলীগ নেতা জহুরুল ইসলাম ও তার লোকজনরা যুবলীগ নেতা শিহাব রানাদের বাড়িতে আকস্মিক হামলা চালায় শিহাব রানা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষ জহুরুল ইসলাম ও তার ভাতিজা কাউছারের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির সবাইকে পিটিয়ে এবং লোহার ফালা দিয়ে ঘা মেরে গুরুতর আহত করে। প্রতিপক্ষের হামলায় শিহাব রানার সহোদর রাশেদুল ইসলাম (৩০) ও তার জ্যেঠা মোঃ সোবাহানসহ গুরুতর আহত অন্তত ২০ জনকে মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাশেদুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলামের পিতা আলমাস সরকার, ভাই শিহাব রানা ও উজ্জল সরকার এবং রাশেদুল ইসলামের জ্যেঠা সোবাহান, তার দাদা আবু তালেবকে দুপুর দুটোর দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম ও মোঃ সোবাহানকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ফুলজোড় গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাবিল, শাহীন, বারেক আকন্দ, ফরিদ বেপারি, শহিদুল ও পাহলোয়ান নামের সাতজনকে আটক করা হয়েছে। খুনের জেরে হামলা নিজস্ব সংবাদদাতা শরীয়তপুর থেকে জানান, নড়িয়া উপজেলার পাচক গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাচার হাতে ভাতিজা খুন হওয়ার ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের আত্মীয়স্বজন ও সমর্থকরা প্রতিপক্ষ আতিক মকদম, রনি মকদম ও মানিক মকদমের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। পুলিশ ফাতেমা বেগম, শিরিন আক্তার ও মানিক মকদমের স্ত্রী মাকসুদা বেগমকে আটক করেছে। উল্লেখ্য, পাচক গ্রামের নাছির মগদম এবং তার বড় ভাই মহিউদ্দিন মগদমের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল। বুধবার বিকেলে বাড়ির উঠানে টিউবওয়েলর পানি নেয়াকে কেন্দ্র করে দুই ভাই ও ভাতিজাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় মহিউদ্দিন মগদম উত্তেজিত হয়ে তার ভাতিজা নজরুল ইসলাম মগদমকে (১৮) কুপিয়ে জখম করে। প্রতিবেশীরা নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমতলীতে আহত চাচার মৃত্যু নিজস্ব সংবাদদাতা আমতলী, বরগুনা থেকে জানান, বরগুনার আমতলী উপজেলার পূর্ব সোনাখালী গ্রামের খাস জমির দখল নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে আহত চাচা রাজ্জাক মৃধার (৭৫) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার পূর্ব সোনাখালী গ্রামের রাজ্জাক মৃধার দখলীয় জমির মধ্যে খাস জমি রয়েছে। ওই এক একর খাস জমির বন্দোবস্ত আনে ভাতিজা ছালাম মৃধা। ভাতিজার বন্দোবস্ত জমির ওপর চাচা রাজ্জাক মৃধা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়। এ নিয়ে চাচা ও ভাতিজার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার দুপুরে ওই বিরোধীয় জমিতে ভাতিজা ছালাম মৃধা তার লোকজন নিয়ে চাষাবাদ করতে যায়। এদিকে চাচা রাজ্জাক মৃধা খবর পেয়ে আমতলী থানা পুলিশের এএসআই কাইয়ুম মিয়া ও আমিনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দেয়। পুলিশের উপস্থিতিতে ভাতিজা ছালাম মৃধা চাচা রাজ্জাক মৃধাকে মারধর করে। এ সময় চাচা রাজ্জাক মৃধা ও তার লোকজন বাধা দিলে তাদের ছালাম মৃধা, ছেলে হাবিব মৃধা, শাহাবুদ্দিন , মোস্তফা, রাসেল ও জাহানারাসহ ১০-১৫ জন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত রাজ্জাক মৃধা, কালাম মৃধা ও হোসেন মৃধাকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের সঙ্কটজনক অবস্থায় রবিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নেত্রকোনায় জমি নিয়ে হামলায় ছাত্র নিহত নিজস্ব সংবাদদাতা নেত্রকোনা থেকে জানান, জেলার বারহাট্টা উপজেলার ভাটি নোয়াপাড়া গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় আজিজুল হক (২০) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছে। নিহত আজিজুল হক ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হকের ছেলে। সে এ বছর স্থানীয় কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এক যুবককে আটক করেছে। জানা গেছে, ভাটি নোয়াপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হকের সঙ্গে একই গ্রামের তার আত্মীয় সিদ্দিকুর রহমানের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল কিছুদিন আগে সিদ্দিকুর রহমান ও তার লোকজন মঞ্জুরুল হকের ছোট ভাই আব্দুল করিমের ওপর হামলা চালায়। এ নিয়ে থানায় মামলা দায়ের হলে দুপক্ষের বিরোধ আরও চাঙ্গা হয়। বুধবার রাত আটটার দিকে মঞ্জুরুল হকের কলেজ পড়ুয়া ছেলে আজিজুল হক আসমা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে সে মারা যায়। ময়মনসিংহে ভোগান্তির নাম পাটগুদাম ব্রিজ মোড় বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ ॥ যাত্রী আর পথচারীদের ভোগান্তির নাম ময়মনসিংহ শহরের পাটগুদাম ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ মোড়। রাজধানী ঢাকা ও উত্তরবঙ্গ ছাড়াও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং সিলেট-চট্টগ্রামের যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনকে প্রতিদিন এ ব্যস্ততম মোড় পার হতে হয়। এর সঙ্গে আন্তঃজেলার যানবাহন, যাত্রী ও পথচারী তো আছেই। সব রুটের যানবাহনকে ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ হয়ে পারাপারের কারণে এ মোড়ে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকছে। ফলে যাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী, পকেটমার আর দালালদের উৎপাতসহ নামধারী পরিবহন শ্রমিকদের হয়রানির কারণে এ ভোগান্তি এখন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সমস্যা সমাধানে স্থানীয় প্রশাসনের নানামুখী উদ্যোগের পরও অবস্থার কোন উন্নতি হচ্ছে না। এ নিয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী যাত্রী ও পথচারীসহ নানান শ্রেণী-পেশার মানুষ। স্থানীয় সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন রুটের যানবাহনের ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ পার হয়ে যাতায়াতের কারণে পাটগুদাম ব্রিজ মোড়টি সব সময় ব্যস্ত থাকছে। এ রকম মোড়ের ওপর গড়ে ওঠা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ও অটোরিক্সা স্ট্যাড এ ব্যস্ততাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ব্রিজ মোড়ের একটি বড় অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে অটোরিক্সা স্ট্যান্ড। এ অবস্থায় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে বের হওয়ার পর হালুয়াঘাট, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, তাড়াইল, নেত্রকোনা, শেরপুরগামী বাসগুলোকে বাড়তি যাত্রীর আশায় ব্যস্ততম সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা হালুয়াঘাটগামী ইমাম পরিবহন ও শ্যামলী বাংলা পরিবহন, শেরপুরগামী সোনার বাংলা, মুক্তাগাছাগামী ইসলাম পরিবহনসহ বেশকিছু পরিবহন সার্ভিসের দূরপাল্লার বাসকেও এ ব্যস্ততম সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে দেখা গেছে। এসব কারণে পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে যানজট লেগেই থাকছে। এ জট প্রতিদিন পাটগুদাম ব্রিজ থেকে চায়না মোড় ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মাত্র পাঁচ মিনিটের সড়ক অতিক্রম করতে সময় লাগছে ২-৩ ঘণ্টা। এ সময় দূরপাল্লার যাত্রী ও পথচারীসহ এ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পাটগুদাম ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ মোড়ের এ সড়কের ওপর যাত্রীবাহী বাস না দাঁড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের নাকের ডগায় এসব বাস সড়কের ওপর দাঁড় করে যাত্রী তুলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কর্তব্যরত সার্জেন্ট ও ট্রাফিক পুলিশের হাবিলদার, কনস্টেবলকে এসব বাসের চালকদের কোন তোয়াক্কা করতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে জনমনে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, লাঠিসোটা হাতে এক শ্রেণীর নামধারী শ্রমিক এসব বাসকে সড়কের ওপর দাঁড় করানোর সুযোগ দিয়ে চালকদের কাছ থেকে প্রকাশ্য বখশিশ নিচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধেও চালকদের সঙ্গে এ রকম অনৈতিক লেনদের অভিযোগ রয়েছে।
×