ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনায় বৈঠার ছন্দ, লাখো মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

যমুনায় বৈঠার ছন্দ, লাখো মানুষের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ যমুনাপারে বৃহস্পতিবার বিকেলে আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন সিরাজগঞ্জের বিনোদনপ্রিয় লাখো মানুষ। জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত যমুনা নদীর শহররক্ষা বাঁধ হার্ডপয়েন্টে এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাক-ঢোলের তালেতালে গ্রামবাংলার গান আর বৈঠার ছন্দ মাতিয়ে তুলেছিল যমুনার ঢেউকে। আর সেই ছন্দে তাল মিলিয়ে নদীর তীরে লাখ লাখ শিশু-কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত নেচে-গেয়ে নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন। বাইচ শুরুর আগে বিকেল তিনটা থেকে নদীতীর মানুষে ভরে যায়। শুধু সিরাজগঞ্জ জেলা নয় ঢাকাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকেও হাজার হাজার বিনোদনপ্রেমী নৌকাবাইচ দেখতে এসেছিল। নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে তীরবর্তী এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নানা পসরা সাজিয়ে বসেছিল। প্রতিযোগিতায় তিনটি গ্রুপে ২১টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা শেষে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ-টেলিভিশন তুলেন দেন জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুর হাসান ও পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ। নৌকাবাইচ দেখতে আসা বয়োবৃদ্ধ রেজাউল করিম জানান, আগে প্রচুর নৌকাবাইচ হতো। কিন্তু ইদানীং তা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই একটু আনন্দ উপভোগ করার জন্য নৌকাবাইচ দেখেতে এসেছি। শিশু রামিমা জানান, বাবার সঙ্গে নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। খুব মজা করলাম। সকলেই প্রতিবছর যমুনায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করার জন্য র‌্যাব-পুলিশের সমন্বয়ে ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছিল। নদীতে ও নদী তীরে সর্বক্ষণিক সাদা পোশাকের পাশাপাশি র‌্যাব-পুলিশের টহল ছিল। অনুষ্ঠানের আয়োজক জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা জানান, দীর্ঘ ছয় বছর যমুনা নদীতে কোন নৌকাবাইচ হয়নি। সিরাজগঞ্জবাসী আনন্দবঞ্চিত ছিল। বন্যা পরবর্তীতে যমুনাপারের মানুষকে নির্মল আনন্দ-বিনোদনের পাশাপাশি দেশীয় ঐতিহ্য রক্ষার জন্য এ নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়েছে। সব বয়সীর মানুষ বিপুল আনন্দ উপভোগ করতে পারায় নিজেদের অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।
×