ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

সমকালের আয়নায় থিয়েটারের নতুন নাটক দ্রৌপদী

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সমকালের আয়নায় থিয়েটারের নতুন নাটক দ্রৌপদী

মনোয়ার হোসেন ॥ আক্ষরিক অর্থে শেষ হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা। তবে এখনও রয়ে গেছে উৎসবের আমেজ। সেই আমেজটি আরও সুন্দর হয়ে ধরা দিয়েছে ঢাকার মঞ্চ নাটকের আঙিনায়। শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে চলছে দর্শকনন্দিত একটি নতুন নাটকের প্রদর্শনী। অন্যদিকে এই প্রদর্শনীর মাঝেই চলছে নাট্যদল থিয়েটারের (আরামবাগ) আরেকটি নতুন নাটকের প্রস্তুতি। দলটি মঞ্চে নিয়ে আসছে নতুন প্রযোজনা। মহাভারতের কেন্দ্রীয় চরিত্র দ্রৌপদীকে উপজীব্য করে নির্মিত হচ্ছে নাটকটি। আর এ নাটকের মাধ্যমে সমকালের আয়নায় রূপায়ণ ঘটবে প্রাচীন আমলের দ্রৌপদীর। এ চরিত্রের মাধ্যমে বর্ণিত হবে পুরুষশাসিত সমাজের যাঁতাকলে পিষ্ঠ নারীর দীর্ঘশ্বাসমাখা অপ্রিয় সত্য কথন। দলের ৩৮তম প্রযোজনাটির শিরোনামও ‘দ্রৌপদী’। আগামী অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে হবে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী। সে লক্ষ্যে বর্তমানে শিল্পকলা একাডেমির মহড়া কক্ষে চলছে প্রযোজনাটি সফলরূপে মঞ্চে তোলার মহড়া। নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রবীর দত্ত। এ নাটকের মাধ্যমে মহাভারতের দ্রৌপদী পরিভ্রমণ করবে মর্ত্যলোকে। যে কথা মহাভারতে বলতে পারেনি, সেই না বলা কথাগুলোই বলবে দ্রৌপদী। মহাভারতের সময়ের ঘটনায় তাকে যেভাবে নিগৃহীত হতে হয়েছে সেই চিত্র উন্মোচনের সঙ্গে অব্যক্ত ও অপ্রিয় সত্য কথাগুলো উঠে আসবে নাটকের আশ্রয়ে। নাট্যকার মহাভারতের আলোকেই দ্রৌপদীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন নাটকে। তবে আখ্যানটি বিস্তৃত হবে মহাভারতের সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত। সেই সুবাদে উপস্থাপিত হবে চিরকালীন ও চিরাচরিত বঞ্চিত নারীর বিষম বেদনা। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নাট্যকার ও নির্দেশক প্রবীর দত্ত বলেন, মহাভারতে দ্রৌপদী বার বার বলতে চেয়েও যে কথা বলতে পারেনি, সেই অব্যক্ত নির্মম সত্য কথাগুলো আজও অপ্রিয় সত্য ও অপ্রকাশিত। সেই সত্যের অন্বেষণেই এ প্রযোজনার ভাবনাটি আসে। দ্রৌপদীর অনুচ্চারিত কথাগুলোকেই বলার চেষ্টা করেছি এ নাটকে। মহাভারতের সেই সময়ের প্রেক্ষাপটেই বর্তমানকে মিলিয়ে নারীর না বলা বা অপ্রকাশিত কথাগুলো বলাই এ নাটকের মূল উদ্দেশ্য। নাটকে দ্রৌপদীর কথোপকথনের মাধ্যমে না বলা কথাগুলো জানার পাশাপাশি প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে দর্শক। নাটকে দ্রৌপদীর চরিত্র রূপায়ণ করবেন দুই অভিনয়শিল্পী তাহমিনা আক্তার ও আকেফা আলম। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করবেনÑ রফিকুল ইসলাম রফিক, তৌহিদুল ইসলাম বাদল, শাহরিয়ার ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির, শংকর চন্দ্র সরকার, লেনিন ফিরো ও প্রবীর দত্ত। প্রযোজনাটির মঞ্চ পরিকল্পনা করছেন আলী আহমেদ মুকুল। পোশাক পরিকল্পনায় রয়েছেন আইরিন পারভীন লোপা। সঙ্গীত পরিকল্পনা করবেন শিশির রহমান। শামীমুর রহমানের আলোক পরিকল্পনায় মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় থাকবেন শংকর সরকার। থিয়েটার আরামবাগের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা প্রযোজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রযোজনাটি। তাদের মধ্যে রয়েছেনÑ বরেণ্য নাট্যজন অধ্যাপক মমতাজউদ্্দীন আহমদ, ড. নীলুফার বানু, নরেশ ভূঁইয়া, রেজাউল একরাম রাজু, প্রদীপ বণিক, অশোক রায় নন্দী, রোকসানা ফেরদৌসী লুসি, রফিকুল ইসলাম রফিক। তানজীনা তমার রবীন্দ্রসঙ্গীত সন্ধ্যা আজ জনপ্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী তানজীনা তমা। স্বতন্ত্র কণ্ঠশৈলী ও গায়কীর জন্য বাংলাদেশ ও ভারতে তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা এবং অসংখ্য শ্রোতার শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বর্গসুধায় নিজেকে সিক্ত করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন তার সঙ্গীতলব্ধ জ্ঞান। প্রায় একযুগ ছায়ানটে রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিক্ষকতা করেছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের খ্যাতনামা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে তমার এখন পর্যন্ত ৭টি একক এ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। আজ শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হবে এই শিল্পীর একক রবীন্দ্রসঙ্গীত সন্ধ্যা। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছে এ সঙ্গীতানুষ্ঠান। জাতীয় জাদুঘর নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে তানজীনা তমার এই সঙ্গীতসন্ধ্যার আয়োজন করেছে। শ্রোতা-দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত এ অনুষ্ঠান। তানজীনা তমা জানান, গোটা আয়োজনে তিনি নিজ পছন্দের প্রায় কুড়িটি গান শোনাবেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন অঙ্গের গান ছাড়াও ডিএল রায়, অতুল প্রসাদসহ কয়েকজন গীতি কবির গানও শোনাবেন। অনুভূতি প্রকাশ করে তমা বলেন, জাদুঘরে এর আগেও একাধিকবার অনুষ্ঠান করেছি, গান গেয়েছি। এবার চেষ্টা করব আমার সদ্য প্রকাশিত ‘হৃদয় মাঝে’ এ্যালবামের গানগুলো শোনাতে। তানজীনা তমা বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ ও বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সক্রিয় সদস্য। তিনি বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সিনিয়র গ্রেডের শিল্পী। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে নিয়মিত গানের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বাংলাদেশের বাইরে আইসিসিআর-এর আমন্ত্রণে তিনি কলকাতা, দিল্লী, ভুবনেশ্বর, ত্রিপুরাসহ ভারতের অনেক শহরে গান গেয়েছেন।
×