সাংবাদিক গৌরী হত্যায় মোদির নীরবতা নিয়ে সরব বিরোধীরা

ভারতে সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন এ বিষয়ে কিছু বলছেন না , তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে নিজ বাসায় খুন হন সাংবাদিক গৌরী। আনন্দবাজার পত্রিকা। গৌরী হত্যাকা-ের পর অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অবশ্য ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। চাপের মুখে বুধবার মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। কিন্তু চুপ রয়েছেন মোদি। এদিকে মোদি যে মুষ্টিমেয় কয়েক জনকে টুইটারে ‘ফলো’ করেন তাদেরই অন্যতম, ব্যবসায়ী নিখিল দাধিচ রীতিমতো অশালীন ভাষায় গৌরী-হত্যাকে সমর্থন করে টুইট করেছেন। নিজেকে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ বলেই দাবি করেন নিখিল। তার এই টুইটের পরে দাবি উঠেছে, পত্রপাঠ এই ব্যবসায়ীকে ‘আনফলো’ করুন মোদি। রাতের দিকে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ টুইট করেছেন, ‘কারও হত্যায় উল্লাস প্রকাশ করাটা লজ্জাজনক।’ কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একজন দক্ষ হিন্দু নেতা। তার শব্দের দু’টি অর্থ থাকে। একটি নিজেদের ভিত্তির জন্য, অন্যটি বাকি দুনিয়ার জন্য। তিনি এমনিতে কিছু বলেন না। অনেক ঘটনা ঘটে গেলে তার পর ভাবেন, কিছু বলে দিই। এখন বিজেপি ও আরএসএসের আদর্শের বিরুদ্ধে যিনি কথা বলবেন, তার উপরেই চাপ বাড়বে, আক্রমণ হবে, এমন কী হত্যাও করা হবে।’ রাহুলের কথার জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলেন, ‘এটি দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য। এ তো রাজ্য সরকারের বিষয়। আর প্রধানমন্ত্রী এখন বিদেশে।’ যদিও বিদেশে থেকেও ক’দিন আগে এক তৃণমূল সাংসদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে টুইট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সিপিআই নেতা গোবিন্দ পানসারে, যুক্তিবাদী নরেন্দ্র দাভোলকর ও এম এম কলবুর্গীর হত্যার কিনারাও হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে গৌরী-হত্যার সঙ্গে বাকি তিন খুনের সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙভির দাবি, আগের তিন হত্যার সঙ্গে যোগ রয়েছে ‘সনাতন সংস্থা’ নামে এক গেরুয়া শিবিরের। সনাতন সংস্থা অবশ্য গৌরী হত্যার নিন্দা করেছে। কিন্তু একই সঙ্গে গৌরীর বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন তাদের মুখপাত্র চেতন রাজনস। ক্ষমতাসীন বিজেপির এমপি প্রহলাদ জোশীর দায়ের করা মানহানির মামলায় যে দিন দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন গৌরী লঙ্কেশ, বিজেপির তথ্য প্রযুক্তি মোর্চার প্রধান অমিত মালব্য টুইট করেছিলেন, ‘আশা করি, অন্য সাংবাদিকরা এটি মনে রাখবেন।’ কংগ্রেসের দাবি, মানহানির মামলায় গৌরীর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সময়েই বিজেপির বিবৃতি থেকে বোঝা যায় তারা কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ। কেন্দ্রের শাসক দলের কটাক্ষ, কলবুর্গী খুন হয়েছিলেন কংগ্রেস-শাসিত কর্নাটকেই। দু’বছরেও কেন হত্যার কিনারা হল না। উত্তরে কংগ্রেস বলেছে, সনাতন সংস্থার ঘাঁটি মহারাষ্ট্রে। সেখানকার বিজেপি-শাসিত সরকার ঢিলেঢালা বলেই এগোচ্ছে না তদন্ত।