ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সীমানা সম্প্রসারণ করছে চীন

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সীমানা সম্প্রসারণ করছে চীন

ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেছেন, ধীরে ধীরে সীমানা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ভারতের ভূমি দখল করছে চীন। এর মাধ্যমে ভারতের সীমা সঙ্কুচিত করছে দেশটি। একদিকে বেজিং পেশীশক্তি দেখাচ্ছে,অন্যদিকে সীমান্তে সমস্যা তৈরি হলে এর সুযোগ নিচ্ছে পাকিস্তান। তাই ভারতকে সব সময় দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকতে হবে। বুধবার নয়াদিল্লীতে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ল্যান্ড ওয়ারফেয়ার স্টাডিজের এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। খবর হিন্দুস্তান টাইমস। কয়েকদিন আগেই ডোকলামে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ৭৩ দিন মুখোমুখি অবস্থানে ছিল চীন ও ভারত। সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে এমন সতর্কবার্তা দিলেন ভারতের সেনাপ্রধান। সেমিনারে তিনি বলেন, উত্তরের শত্রু স¤পর্কে বলা যায়,তারা পেশীশক্তি দেখানো শুরু করেছে। সালামি সামরিক পরিভাষায় যার অর্থ হলো যে, বড় লক্ষ্য একবারে হাসিল করা মুশকিল, তার জন্য চুপিসারে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। ধীরে ধীরে একটার পর একটা এলাকা দখল করার চেষ্টা, আমাদের সহ্যের সীমা পরখ করা, এসব শুরু হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতকে ভাবতে হবে এবং সংঘর্ষের দিকে পরিস্থিতি মোড় নিতে পারে এই ভেবেও তৈরি থাকতে হবে। সেনাপ্রধান রাওয়াত চীনা সেনার দিক থেকে ডোকলাম কিংবা লাদাখের মতো কিংবা আরও বেপরোয়া অভিযানের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করেন। রাওয়াত বলেন, এসব সংঘাত নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, কিছুদিন চলবে নাকি সীমান্তজুড়ে পুরোমাত্রার যুদ্ধে পরিণত হবে, এটা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। তবে পশ্চিমের শত্রু যে এর সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে, এতে কোন সন্দেহই নেই। ভারত-চীন সংঘাতময় পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সুযোগ নিতে পারে এমন আশঙ্কার কথা এই প্রথমবারই আলোচনা এসেছে, তেমন নয়; তিন বছর আগে ভারতীয় বিমানবাহিনী চীন-ভারতের উত্তেজনার মাঝে পাকিস্তান সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে। তবে ২০১৬ সালের মার্চে ভারতীয় বিমানবাহিনীর চীফ মার্শাল (পরবর্তিতে ভাইস চীফ) বি এস ধাওনা বলেছিলেন, একই সঙ্গে দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত যুদ্ধবিমান ভারতের বিমানবাহিনীর নেই। এছাড়া এর আগে সামরিক বাহিনীর তরফে সরকার এমনকি সংসদীয় কমিটির কাছেও পাকিস্তান-চীনকে এক সঙ্গে মোকাবেলার জন্য তৈরি থাকার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। ভারত ডোকলাম থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ায় চীন এটাকে তাদের বিজয় হিসেবে দেখছে। আর ভারতও বলছে, দুই দেশই ডোকলাম খালি করে দিলে অবশ্যই তা হবে ভারতের কূটনৈতিক জয়। কারণ, আড়াই মাস ধরে চীন বার বার ভারতকে ডোকলাম থেকে সরে যেতে বললেও ভারত সরেনি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সংসদে জানিয়েছিলেন, সরতে হলে দুই দেশের সেনাদেরই সরে যেতে হবে। উল্লেখ্য, চীনে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন শুরুর কয়েক দিন আগে ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের এ সিদ্ধান্ত নিল দুই দেশ। গত জুনে চীনা সেনাবাহিনী ডোকলামে সড়ক তৈরির উদ্যোগ নিলে ভারতীয় সেনারা তাদের বাধা দেয়। এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়লে পরে সেখানে সেনা সমাবেশ ঘটায় তারা।
×