ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশ এইডসমুক্ত করতে সরকারের কর্মসূচী অব্যাহত ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দেশ এইডসমুক্ত করতে সরকারের কর্মসূচী অব্যাহত ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমন্বিত উদ্যোগে এইডস প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশে এইচআইভি ও এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচীর সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে এইডসমুক্ত করতে নানা কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছে বর্তমান সরকার। পোলিও ও ধনুষ্টঙ্কারমুক্ত হয়েছে দেশ। সংক্রামক রোগের হার অনেকগুণ কমে গেছে। বাঙালী সব সময় জয় করতে জানে। আমাদের প্রত্যয় আছে, আমরা জয় করব। দেশে এইডস রোগী ও এইচআইভি সংক্রমণের হারও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে অসচেতন হলে ও কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত না রাখলে দেশে দ্রুতহারে এইচআইভি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সমস্ত কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ বিদ্যমান রয়েছে। এইডস প্রতিরোধে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগ অনেক কর্মসূচী চলমান রয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন ভুল ধারণা এইডস রোগীদের ঘিরে অপবাদ ও বৈষম্য তৈরি করে। এসব দূর করতে হবে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এইডস/এইচআইভি প্রতিরোধ কর্মসূচী নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব (স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ) মোঃ সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ। সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে নতুন করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭৮ জন, মারা গেছেন ১৪১ জন। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২২১ জন, মারা গেছেন ৭৯৯ জন। এইডস প্রতিরোধ কার্যক্রমের কিছু চিত্র তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এন্টি-রিট্রোভাইরাল ড্রাগ’ এইডস রোগীদের মধ্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এছাড়া অনেক সরকারী হাসপাতালে সিডি-৪ সেন্টারের মাধ্যমে এইডস রোগীদের শারীরিক অবস্থা নির্ণয় করাসহ এসব প্রতিষ্ঠানসমূহে রোগীদের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও কাউন্সিলিং সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ডের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। শীঘ্রই সারাদেশে সরকারী অর্থায়নে এইডস রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। যেহেতু দেশে এইডস রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম। তাই বর্তমান সরকারের এইডস রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা এ মুহূর্তে নেই। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সাধারণ মানুষের সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে এইচআইভি ও এইডস কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। মানুষের মধ্যে এইচআইভি ও এইডস বিষয়ক সচেতনতা, ঝুঁকি অনুধাবনের মাত্রা, সঠিক ধারণা ও জ্ঞান বৃদ্ধি পেয়েছে। যা এইচআইভি প্রতিরোধে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে এইডস বিষয়ে অপবাদ ও বৈষম্যও কমে আসছে। একজন ব্যক্তি এইচআইভি আক্রান্ত কিনা তা জানার একমাত্র উপায় হলো তার রক্ত পরীক্ষা করা। এইচআইভিতে আক্রান্ত হলেও একজন ব্যক্তি বহু দিন সুস্থ ও সবলভাবে বেঁচে থাকে এবং নিয়মিত কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারেন। এইচআইভি সংক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে রোগের কোন লক্ষণ দেখা যায় না। এইচআইভি চিকিৎসা যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় তত ভাল। দেরি করে চিকিৎসা শুরু করলে সেই চিকিৎসা কার্যকর হয় না। এ জন্য রক্ত পরীক্ষা করে দ্রুত এইচআইভি নির্ণয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
×