ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলা

এমপি রানাসহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এমপি রানাসহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ৬ সেপ্টেম্বর ॥ টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘ প্রায় চার বছর পর টাঙ্গাইলের সবচেয়ে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হলো। বুধবার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে এমপি রানাকে টাঙ্গাইল বিচারিক আদালতে হাজির করা হয়। টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া অভিযোগ গঠনের পাশাপাশি এ মামলায় আগামী ১৮ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্যের আদেশ দেন। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণের পর অসুস্থতার কথা বলে এমপি রানা আদালতে হাজিরা থেকে বিরত থেকেছেন। ফলে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ খুনের মামলার বিচারকাজ শুরু হয়নি। গত বছরের নবেম্বর থেকে জুলাই পর্যন্ত মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানি ৮বার পিছিয়েছে। প্রতিবারই এমপি রানার অসুস্থতার কারণে। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। বুধবার আদালত শেষে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি মনিরুল ইসলাম খান ও বাদীপক্ষের আইনজীবী এস আকবর খান জানান, এ মামলার ১৪ আসামির মধ্যে এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ সাতজন উপস্থিত ছিল। এরা হলো- জেলহাজতে থাকা আনিছুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ সমীর। এছাড়া জামিনে থাকা সাবেক পৌর কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাসির উদ্দিন নুরু ও ফরিদ আহমেদ। এ মামলায় পলাতক রয়েছে এমপি রানার ছোট তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, এমপি রানার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, এমপি রানার দারোয়ান দাঁতভাঙ্গা বাবু, সাবেক যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন চাঁন ও ছানোয়ার হোসেন। আদালত শেষে আসামি এমপি রানাকে পুনরায় জেলহাজতে পাঠানো হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাকী জানান, এ মামলায় আদালতে তিনটি আবেদন করা হয়। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পুনঃতদন্ত ও অভিযোগ গঠন না করার আবেদন দু’টি খারিজ করে দিয়েছে। সুষ্ঠু চিকিৎসার অপর আবেদনটি আদালত বিবেচনায় নিয়েছে। সুষ্ঠু বিচারের আশায় আমরা উচ্চ আদালতে আবেদন করব। এ মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ জানান, সরকারের বিচার ব্যবস্থায় আমার আস্থা রয়েছে। আসামিরা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, সত্যের জয় হবেই। আসামিরা এখন সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এদিকে বুধবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলকারীরা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বিগত ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ শহরের কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে পাওয়া যায়। এ ঘটনায় স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলা তদন্ত করে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয়।
×