ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ বছরেও নির্মিত হয়নি ভবন ॥ পুকুর পাড়ে পাঠদান

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পাঁচ বছরেও নির্মিত হয়নি ভবন ॥ পুকুর পাড়ে পাঠদান

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর ধরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর দোতলা ভবন নির্মাণ করছে। কিন্তু সে ভবনের নির্মাণ কাজ কবে শেষ হবে, তা কেউ বলতে পারছে না। স্কুল কর্তৃপক্ষ স্থান সংকুলানের অভাবে তাই বাধ্য হয়ে পুকুর পাড়ের পাকা ঘাটলায় ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন। বর্ষা হলে বন্ধ হয়ে যায় সে ক্লাসেরও পাঠদান। এভাবে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী। চরবিশ্বাস জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭০ সালে। বর্তমানে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ শয়েরও বেশি। প্রতি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি শ্রেণীকক্ষ। প্রায় ত্রিশ বছর আগে উপজেলা পরিষদ ৮ কক্ষের একটি টিনের চৌচালা ঘর তুলে দিয়েছে। পাঠদানের জন্য ভরসা টিনের ঘর দীর্ঘদিন সংস্কার বা মেরামত হয়নি। এতে টিনের ঘরটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সামান্য বর্ষাতেই অঝোরে পড়ে পানি। ভেসে যায় মাটির মেঝে। দরজা-জানালা খুলে পড়ছে। ওপরের টিনের চাল মরিচা ধরে ক্ষয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন দুটি শিফট করেও শিক্ষার্থীদের সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিদিন স্কুল সংলগ্ন পুকুর পাড়ের পাকা ঘাটলায় বসছে একের পর এক ক্লাস। সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষক পাকা ঘাটলার মাঝখানে চেয়ার নিয়ে বসছেন। আর শিক্ষার্থীরা ঘাটলা ঘিরে কেউ দাঁড়িয়ে, কেউবা বসে পাঠ নিচ্ছে। শিক্ষক হাতেম আলী জানান, ঘাটলার ক্লাসও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। কেবল রোদেই ক্লাস নেয়া হয়। বর্ষায় বন্ধ থাকে। ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরাফাত জানায়, ঘাটলায় ক্লাস নিতে তাদের খুব সমস্যা হয়। স্যারেরা ব্লাকবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন না। পাশেই ছেলেমেয়েরা চেঁচামেচি করে। ভবন সঙ্কটের বিষয়ে শিক্ষকরা প্রচ- ক্ষুব্ধ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ওপর। শিক্ষকরা জানান, পাঁচ বছর আগে ২০১২ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর ১ কোটি ১৬ টাকা ব্যয়ে একটি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। এক বছরের মধ্যে ভবনটি হস্তান্তরের নির্দেশনা থাকলেও আজ পর্যন্ত এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ নাসিরউদ্দিন নেছার জানান, ভবনটি স্থানীয় বিএনপির এক প্রভাবশালী মহিলা নেত্রী নির্মাণ করছেন। ভবনটির কোন ডিজাইন কিংবা বরাদ্দ সংক্রান্ত কাগজপত্র তাদের দেয়া হয়নি।
×