ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ডিসেম্বরে ৬৪ জেলায় শিশু চলচ্চিত্র উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ডিসেম্বরে ৬৪ জেলায় শিশু চলচ্চিত্র উৎসব

মনোয়ার হোসেন ॥ সব আনন্দই যেন বড়দের জন্য। তাই তো চিত্ত বিনোদনের ক্ষেত্রে ছোটরা আরও বেশি উপেক্ষিত। তাদের মন রাঙাতে নিয়মিত নির্মিত হয় না নাটক, গাওয়া হয় না গান, বসে না কবিতা বা ছড়া পাঠের আসর; এমনকি খুঁজে পাওয়া যায় না কোন টিভি অনুষ্ঠান। শিশুদের এই সঙ্কুচিত বিনোদন ভুবনে রং ছড়াতে চমৎকার এক উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। ‘সবার জন্য চলচ্চিত্র, সবার জন্য শিল্প-সংস্কৃতি’ প্রতিপাদ্যে একযোগে দেশের ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। বিনা দর্শনীতে শিশুরা দেখবে তাদের মানস উপযোগী বৈচিত্র্যময় বিষয়ভিত্তিক চলচ্চিত্র। এখন চলছে সেই উদ্যোগকে সফল করে তোলার সর্বাত্মক প্রস্তুতি। জমা নেয়া হচ্ছে উৎসবে প্রদর্শিতব্য শিশুতোষ ছবি। আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব। উৎসব প্রসঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির চলচ্চিত্র ও নাট্যকলা বিভাগের সহকারী পরিচালক মাসুদ সুমন জনকণ্ঠকে বলেন, একটি সৃজনশীল ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন জাতি গঠনে শিশুদের নিয়ে নানামুখী কার্যক্রমের বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং সকল নির্মাতাকে শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহী করতেই শিল্পকলা একাডেমির আয়োজন বাংলাদেশ শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৭। উৎসব সফল করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আমাদের কর্মকা- শুরু হয়ে গেছে। উৎসবের জন্য ৩০টির বেশি ছবিও জমা পড়েছে। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা আরও বাড়তে থাকবে। সেসব ছবি নিয়ে আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে এ উৎসব। প্রতি জেলার শিল্পকলা একাডেমি ভবনে প্রদর্শিত হবে উৎসবের চলচ্চিত্র। যেসব জেলায় একাডেমির ভবন নেই সেখানে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী মিলনায়তনে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এ উৎসবের মাধ্যমে শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে শিশুতোষ চলচ্চিত্রের আনুপাতিক হার কম হলেও নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু নান্দনিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র। একইসঙ্গে আমাদের দেশের শিশু নির্মাতারাও চলচ্চিত্র নির্মাণে রাখছেন সৃজনশীলতার স্বাক্ষর। বিগত কয়েক বছরে শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং শিশুতোষ চলচ্চিত্র বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আর বিশাল পরিসরে এ ধরনের উৎসবের শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাতাদেরও অনুপ্রাণিত করবে। দেশব্যাপী একযোগে ৬৪টি জেলায় সপ্তাহব্যাপী সকল দৈর্ঘের কাহিনী ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নিয়ে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। জমাকৃত চলচ্চিত্র সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে প্রদর্শিত হবে উৎসবে। মুনিরা মোরশেদ মুন্নী, সাজুদেল আওয়ালসহ সাত সদস্যকে নিয়ে গঠিত হয়েছে উৎসবের ছবি নির্বাচক কমিটি। উৎসব যেহেতু শিশুদের নিয়ে তাই কমিটিতে শিশুদের প্রতিনিধি হিসেবে রাখা হয়েছে ফারেহা জেবিন ঐশীকে। এছাড়া সাত সদস্যের জুরি কমিটির মাধ্যমে উৎসবে প্রদর্শিত চলচ্চিত্রের নানা বিষয় বিবেচনায় পুরস্কার প্রদান করা হবে। এই জুরি কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে নন্দিত চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকিকে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন। গত ৩১ জুলাই চলচ্চিত্র জমাদানের শেষ তারিখ থাকলেও এটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য চলচ্চিত্র জমা নেয়া হবে। দুই বছরের মধ্যে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র এবং শিশু নির্মাতাদের চলচ্চিত্র উভয় ক্ষেত্রে তিনটি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বিশেষ জুরি পুরস্কার প্রদান করা হবে। উৎসবে ঢাকাসহ সকল বিভাগের যে কোন একটি জেলায় নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবে অংশগ্রহণকারী সকল চলচ্চিত্র নির্মাতাকেই উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে সনদপত্র প্রদান করা হবে। উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আবেদনকারীকে নির্মিত চলচ্চিত্র অবশ্যই এমপি-ফোর ফরম্যাটে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট একটি ফরমে আবেদন করতে হবে। সঠিকভাবে আবেদনপত্র পূরণ করে চলচ্চিত্রটি নির্ধারিত সময়ের আগে জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত (সফট কপি বিজয় ফন্টে), দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন/পাসপোর্টের ফটোকপি, শিক্ষার্থী হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে। নির্মিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নাম ও চলচ্চিত্রের কাহিনী সংক্ষেপের সফট কপি এবং চলচ্চিত্রের পোস্টার ডিজাইন (যদি থাকে), চলচ্চিত্রের স্থির আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্রের দুই কপি ডিভিডি জমা দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সাজিয়ে সাজিয়ে নির্মাতাকে সেগুন বাগিচার শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার ৬০১ নং কক্ষে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে জমা দিতে হবে। ই-মেইলের মাধ্যমেও সমকালীন বিভাগের নির্মাতারা তথ্য প্রদান বা আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন। ই-মেইলের ঠিকানা হলো mashud.sumon @gmail.পড়স।
×