ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তামণির হাতের সব টিউমার অপারেশন করা হয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মুক্তামণির হাতের সব টিউমার অপারেশন করা হয়েছে

জান্নাতুল মাওয়া সুইটি ॥ তৃতীয় দফায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মুক্তামণির আক্রান্ত হাতের সব টিউমার অপসারণ সম্ভব হয়েছে। টানা ৩ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মুক্তামণির বাম হাতের টিউমার অপসারণ করেন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় তার অস্ত্রোপচার শেষ হয়। এরপর তাকে আইসিউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) স্থানান্তর করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডাঃ সামন্তলাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামণির হাতের সব টিউমার অপসারণ করা হয়েছে। তার হাতে আর কোন টিউমার নেই। তার সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। এ অস্ত্রোপচারে তার শরীরে চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। মুক্তামণিকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে মুক্তামণি একেবারে ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানান ডাঃ সামন্তলাল সেন। তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা সে আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবে। মুক্তামণির শরীরের আক্রান্ত অন্যান্য অংশের অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে তিনি জানান, কমপক্ষে ৭ থেকে ১০ দিন অপেক্ষা করা হবে। এ সময়টার মধ্যে অপারেশনের জন্য তাকে তৈরি করতে হবে। মুক্তামণির আরও দুই কিংবা তিনটি অপারেশন লাগবে। মুক্তামণির হাতের তৃতীয় দফার অস্ত্রোপচারে সাত জনের একটি চিকিৎসক দল অংশ নেন বলে জানান ডাঃ সামন্তলাল সেন। মুক্তামণির এই রোগটিকে বিরল রোগ বলা হলেও তার প্রথম বায়োপসি করার পর জানা যায়, সে রক্তনালীর টিউমারে (হেমানজিওমা) আক্রান্ত। মুক্তামণির হাতে প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার হয় ১২ আগস্ট। সে সময় মুক্তামণির ডান হাত থেকে প্রায় তিন কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ করেন চিকিৎসকেরা। দ্বিতীয় দফায় ২৯ আগস্ট অস্ত্রোপচার শুরু করা হলেও প্রচ- জ্বরের কারণে তা অসমাপ্ত রাখা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার তৃতীয় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলো। সাতক্ষীরায় জন্মের দেড় বছর বয়স থেকে মুক্তামণির ডান হাতের সমস্যার শুরু। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়। ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে তার ডান হাত বেশ ফুলে যায়। সে বিছানাবন্দী হয়ে পড়ে। মুক্তামণির রোগ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। গত ১১ জুলাই মুক্তামণিকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।
×