ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুচির দেশে এমন হত্যাকান্ড মেনেনেয়া যায় না ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সুচির দেশে এমন হত্যাকান্ড মেনেনেয়া যায় না ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুকে সরকার মানবিক দৃষ্টিতে দেখছে। মানবিক কারণে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন কাদের সিদ্দিকীকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর কাদের সিদ্দিকী ডেঙ্গুজ্বর, ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহর অধীনে ভর্তি হন। রোহিঙ্গা হত্যাকান্ডের বিষয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অত্যন্ত অমানবিক হত্যাকান্ড চালাচ্ছে সে দেশের সরকার। একটি জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য যে হত্যাকা- তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা তাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিচ্ছি। তারা এদেশে আসছে, আমরা তো তাদের মতো নির্যাতন চালাতে পারি না। তিনি বলেন, আউং সান সুচির দেশে এ ধরনের হত্যাকান্ড কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না যিনি শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন। তাদের দেশে অভ্যন্তরীণ কোন সমস্যা থাকলে তা দ্রুত সমাধান করে এসব রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়া উচিত। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাদের প্রতি মানবতা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু এ সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ করা উচিত। আমাদের এই জনবহুল দেশে মানবিক কারণে তো দীর্ঘদিন সহ্য করতে পারি না। রোহিঙ্গা হত্যাকা- বন্ধ করতে সে দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হত্যাকান্ড বন্ধ করুন। মানুষ হত্যা করে কোন সমস্যার সমাধান কোন দিন হয়নি, হবেও না। যদি কোন সমস্যা থাকে তার দ্রুত সমাধান করা উচিত। রূপার ধর্ষক ও হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ॥ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জের তাড়াশের নিহত রূপার ধর্ষক ও হত্যাকারীদের পক্ষে মামলায় না লড়তে আইনজীবী সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তাড়াশের গ্রামের দরিদ্র ঘরের মেয়ে রূপা জীবিকা নির্বাহের জন্য সংগ্রামী জীবনকে বেছে নিয়েছিল। তার ওপরই নির্ভর করত দরিদ্র পরিবারটি। এই সম্ভাবনাময় তরুণীকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে যারা খুন করেছে তারা পশুর চাইতেও অধম। এদের হয়ে আইনী লড়াই না চালানোর জন্য সকল আইনজীবীর প্রতি আমি অনুরোধ করছি। তিনি এ সময় রূপার ছোট বোনকে সরকারী চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ঈদের আগের দিন আমি তার বাসায় গিয়ে দেখেছি একটি পাশবিক ঘটনা কিভাবে একটি পরিবারের ঈদের আনন্দকে তছনছ করে দিতে পারে। এ সময় মন্ত্রী সেই হতভাগ্য পরিবারকে তাঁর ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তার কথা উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে স্বাস্থ্য খাতের দৃশ্যমান সাফল্য অর্জনে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার পূরণের জন্য চলমান অর্থবছর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এই অর্থ বছরে গৃহীত প্রকল্পগুলো দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। ঈদ-উল আযহার ছুটির সময় হাসপাতালগুলো এবং বন্যার্ত এলাকায় চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচীর সফল বাস্তবায়নে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের কর্মচারীদের ঐকান্তিক দায়িত্ববোধ ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মোঃ আসাদুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
×