ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক প্রযুক্তি পাকিস্তানের চেয়ে উন্নত ॥ কাদির খান

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক প্রযুক্তি পাকিস্তানের চেয়ে উন্নত ॥ কাদির খান

পাকিস্তানের পরমাণুবিজ্ঞানী ডক্টর আবদুল কাদির খান বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রযুক্তি পাকিস্তানের চেয়ে অনেক উন্নত মানের। তবে সেই সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে পিয়ংইয়ংকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোন ধরনের প্রযুক্তি সহায়তার কথা নাকচ করে দেন। খবর ডনের। বিবিসি উর্দুকে গত সোমবার দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাতকারে আবদুল কাদির খান দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, উত্তর কোরিয়ার একদল সুদক্ষ পরমাণুবিজ্ঞানীর জন্য দেশটি আজ পরমাণু ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। উত্তর কোরিয়া গত রবিবার সফলভাবে একটি হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর একদিন পর ডক্টর খান এই মন্তব্য করেন। গত রবিবারের হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষাটি নিয়ে দেশটি ষষ্ঠবারের মতো তার পরমাণু পরীক্ষা চালাল এবং এটিকে আগের বোমাগুলো থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী বলে গণ্য করা হচ্ছে। ডক্টর আবদুল কাদির খানকে পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচীর জনক বলা হয়। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমে প্রযুক্তি সহায়তা দিতে তিনি দুইবার উত্তর কোরিয়া সফর করেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান, তাদের প্রযুক্তিজ্ঞান পাকিস্তানের চেয়ে অনেক উন্নত। উত্তর কোরীয় বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত উচ্চমানসম্পন্ন এবং তাদের অনেকে রাশিয়ায় গিয়ে এসব প্রযুক্তিজ্ঞান অর্জন করে এসেছে। বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাতকারে ডক্টর খান অভিমত প্রকাশ করেন, যে কোন সঙ্কটে চীন ও রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে একা ছেড়ে দেবে না। কেননা, এই দুটি কমিউনিস্ট দেশই বিশ বছর ধরে ভিয়েতনাম যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামকে সাহায্য-সমর্থন যুগিয়েছিল। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচীতে পাকিস্তানের ভূমিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ডক্টর খান সরাসরি এ ধারণা নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘কোন প্রশ্নই আসে না, কেননা পাকিস্তানের পারমাণবিক প্রযুক্তি সেই আগের গতানুগতিক অবস্থায়ই আছে, সে ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। তবে, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক সাধারণ জ্ঞানের ওপর প্রতিষ্ঠিত। দেশটি গত রবিবারে যে হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ডক্টর খান বলেন, এই বোমাটির ধ্বংসাত্মক শক্তি এত ব্যাপক যে, কোন শহরকে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। কারণ, হাইড্রোজেন বোমার কার্যকারিতা এটম বা আণবিক বোমার চেয়ে অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, যেখানে একটি এটম বোমা দেড় থেকে দুই কিলোমিটার পরিধিজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে, সেখানে একটি হাইড্রোজেন বোমা পুরো শহর নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। পাকিস্তানের এই বিজ্ঞানী ২০০৪ সালে স্বীকার করেছিলেন, তিনি উত্তর কোরিয়া, লিবিয়া ও ইরানে পারমাণবিক প্রযুক্তি ও এ সংক্রান্ত জ্ঞান সরবরাহ করেন।
×