ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাতবররা বাঁচতে দিলেন না দরিদ্র গৃহবধূকে

প্রকাশিত: ০৫:০২, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মাতবররা বাঁচতে দিলেন না দরিদ্র গৃহবধূকে

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ প্রতিপক্ষের হামলায় আহত গৃহবধূ আবেজন বেগমকে (৩৫) সুচিকিৎসা হতে বঞ্চিত করে বাঁচতে দিলেন না গ্রাম্য মাতবররা। বরং ওই গৃহবধূ মারা যাওয়ার পর ২০ হাজার টাকায় লাশ দাফনের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে ২২ ঘণ্টা পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মঙ্গলবার জেলা মর্গে ময়না তদন্ত করেছে। কিশোরীগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের মাঝা ভেড়ভেড়ী মুতরাপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের ১৫ জুলাই প্রতিবেশী আবুল কালামের স্ত্রী কারিমা বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের দিনমজুর হামিদুল ইসলামের স্ত্রী আবেজন বেগমের বচসা হয়। বচসায় এক পর্যায়ে কারিনা ও তার স্বামী আবুল কালাম, ছেলে কাশেম আলী আবেজনকে বেদম মারপিট করে। এতে আবেজন গুরুতর আহত হয়। গ্রামবাসীর সহায়তায় হামিদুল ইসলাম তার আহত স্ত্রী আবেজনকে নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে। পরের দিন ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন মীমাংসার কথা বলে চিকিৎসা করতে বাধা দিয়ে হাসপাতাল হতে জোরপূর্বক আবেজনকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে। এরপর আবেজনের স্বামীর হাতে ৩ হাজার টাকা দিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা করতে চাপ দেয়। আবেজন অসুস্থ হলে তাকে ১৯ জুলাই পুনরায় নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রভাবশালীরা পুনরায় ২৩ জুলাই আবেজনকে বাড়িতে ফিরে নেয়। আবেজনের স্বামী হামিদুল ইসলাম বলেন, তারা সবাই মিলে আমার স্ত্রীকে মারপিট করে। এতে আমার স্ত্রী বুকে ও মাথায় প্রচ- আঘাত পেয়েছিল। মেডিক্যালের ইনজুরির খাতায় বুকে ও মাথায় আঘাতের কথা লেখা ছিল। কিন্তু মেম্বার ও চেয়ারম্যান আমার স্ত্রীর সঠিকভাবে চিকিৎসা করাতে দেয়নি। এ অবস্থায় আমার স্ত্রী রবিবার রাত ১১টায় মারা যায়। যারা আমার স্ত্রীকে মারধর করে তারা বাড়ি হতে পালিয়ে যায়। এরপর ইউপি মেম্বার রাতেই লাশ দাফনের জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি রাজি না হওয়ায় পরের দিন সকালে ইউপি চেয়ারম্যান এসে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে লাশ দাফনের জন্য চাপ দিতে থাকে। পড়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে সোমবার রাত আটটার দিকে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
×