ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়ায় ২০ ফেরির ১৩টিই বন্ধ ॥ যান পারাপারে চরম দুর্ভোগ

পাঁচ দিনেও অচলাবস্থা কাটেনি

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পাঁচ দিনেও অচলাবস্থা কাটেনি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৫ সেপ্টেম্বর ॥ পদ্মায় নাব্য সঙ্কটে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই নৌ-রুটে চলাচলরত ২০ ফেরির মধ্যে ১৩টি বন্ধ রয়েছে। পারাপারের অপেক্ষায় শিবচর কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আটকে পড়েছে ৫ শতাধিক যানবাহন। বর্তমানে ছোট ছোট ৭টি ফেরি দিয়ে বিপুল সংখ্যক যানবাহন পার করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ভারি যানবাহন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুট ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে। শুক্রবার থেকে এই অবস্থার সৃষ্টি হলেও ৫ দিনে কোন পরিবর্তন হয়নি। ঈদ শেষে রাজধানী ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোটে। এদিকে বেলা যতই বাড়ছে ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মায় পানি কমতে থাকায় নাব্য সঙ্কট ও ডুবোচরের কারণে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া রুটে চলাচলকারী ৪টি রো-রো চারদিন ধরে এবং টানা ফেরিসহ আরও ৯টি ফেরি ২দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। পদ্মা নদীতে ড্রেজিং কাজ চলামান থাকায় ২০টি ফেরির মধ্যে বর্তমানে চলাচল করছে ৭টি ফেরি। তাও বিকল্প চ্যানেল ব্যবহার করায় সময় লাগছে দ্বিগুণ। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আটকে পড়েছে ৫ শতাধিক যানবাহন। নাব্য সঙ্কট সমাধানে ড্রেজিং-এর কাজ অব্যাহত রয়েছে। ড্রেজিং-এর কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভারি যানবাহন ও যাত্রীবাহী দূরপাল্লার বাসকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুট ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটে যে ৭টি ফেরি চলাচল করছে সে সব ফেরি ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যানবাহন নিয়ে বিকল্প চ্যানেল দিয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। যাত্রী পারাপারে ৮৭ লঞ্চ ও দুই শতাধিক স্পিডবোট চলাচল চলাচল করছে। এই সুযোগে স্পিডবোটে দেড় শ’ টাকার স্থলে দুই শ’ টাকা ভাড়া নিচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। রবিবার রাতে যমুনাসহ ২টি টানা ফেরি ডুবোচরে আটকে পড়ে। সোমবার সকালে ওই ২টি ফেরি অন্য জাহাজ দিয়ে টেনে উদ্ধার করা হলেও সোমবার থেকে টানা ফেরিসহ ৯টি ফেরি বন্ধ হয়ে যায়।এদিকে ঈদের চারদিন পরেও ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ রয়েছে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটে। নির্ধারিত দিনে যারা ঈদ করতে বাড়ি ফিরতে পারেনি, তাদের অনেকেই রাজধানীতে কোরবানি দিয়ে এখন বাড়ি ফিরছেন। একদিকে মানুষ ঈদ-উল-আযহার ছুটি কাটিয়ে ঝামেলা এড়াতে আগে-ভাগেই কর্মস্থলে ছুটতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ যারা ঈদ করতে বাড়ি যেতে পারেননি, তারা এখন বাড়ির পথে যাত্রা করেছেন। এ কারণে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া রুটে দ্বি-মুখী যাত্রী চাপ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় পদ্মা নদীতে হঠাৎ করে পানি হ্রাস পাওয়ায় দেখা দিয়েছে নাব্য সঙ্কট। এখনও বন্ধ রয়েছে ৪টি রো-রো ফেরি ও ২টি টানা ফেরি। ফলে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে দুই শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌ-রুটের লৌহজং চ্যানেলটিতে নাব্যতা সঙ্কটে ফেরি চলাচলের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ২১টি ফেরির মধ্যে ছোট আকারের ৪টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপারের চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে পদ্মার পানি আবারও কমতে থাকায় ফেরি চলাচলে অচলাবস্থা দেখা দেয়। বিআইডব্লিউটিএ ইতিমধ্যে ভারি যানবাহনগুলোকে বিকল্প পথে চলাচল করতে নির্দেশনা দিয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা, কুমিল্লা, কাকলী ও করবী নামের চারটি ছোট ফেরি দিয়ে প্রাইভেট ও মাইক্রোবাসের মতো হালকা যানবাহনসহ যাত্রীদের পারাপার করা হচ্ছে। নাব্যতা সঙ্কটের কারণে রবিবার রাত থেকে রায়পুরা ও যমুনা নামের ফেরি দুটো প্রায় অর্ধশত যানবাহনসহ লৌহজং চ্যানেলে আটকে যায়। যা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গত বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) থেকে পদ্মার পানি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকায় এ রুটে ফেরি চলাচলের মারাত্মকভাবে বিঘœ ঘটছে। এখন একরকম অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দিন দিন আরও প্রকট আকার ধারণ করছে।
×