ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ত্যাগের মহিমায় দেশজুড়ে ঈদ-উল-আযহা উদযাপন

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ত্যাগের মহিমায় দেশজুড়ে ঈদ-উল-আযহা উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ত্যাগের মহিমায় দেশজুড়ে পালিত হলো পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। এবারের ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে সব আয়োজন নিরাপদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের সবক’টি গুরুত্বপূর্ণ ঈদের জামাত ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছিল সতর্ক নজরদারি। ঈদের দিন কড়া নিরাপত্তায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদ-উল-আযহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল আটটায় শুরু হয় এ জামাত। তাতে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্য, সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি, বিদেশী কূটনীতিক, উর্ধতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতারবন্দী হয়ে একত্রে ঈদ-উল-আযহার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। ঈদের ময়দানে ছিল কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র‌্যাব, পুলিশ, বিভিন্ন পর্যায়ের গোয়েন্দাসহ নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় ঈদগাহ ময়দান ও তার আশপাশের এলাকায়। নিরাপত্তার স্বার্থে জায়নামাজ ও মোবাইল ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ময়দানে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ঈদের দিন সকালে অল্প বৃষ্টি হলেও তা পুরো আনন্দে বিঘœ ঘটাতে পারেনি। আগে ভাগেই আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হচ্ছিল ঈদের দিন রাজধানীসহ সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাই জাতীয় ঈদগাহ ময়দান বৃষ্টির কথা মাথায় রেখেই সাজানো হয়েছিল। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে কোরবানির এই জামাতে মুসল্লিদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে দারুণ উৎসাহ উদ্দীপনা। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর নানা প্রান্ত থেকে দল বেঁধে মুসল্লিরা আসতে থাকেন। সাদা পাঞ্জাবি পরে, সুগন্ধি মেখে, জায়নামাজ হাতে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের উপস্থিতি ঈদগাহ ময়দানকে সুমোহিত করে তোলে। তবে ঈদগাহ ময়দানের অভ্যন্তরে অনেকাংশ জায়গা খালি ছিল। সাধারণত ঈদ-উল-ফিতরের জামাতের তুলনায় উপস্থিতি কম হলেও নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্ট মুসল্লিরা। কয়েক বছর ধরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। সকাল থেকে দল বেঁধে অনেক মহিলাকেও আসতে দেখা যায় ঈদের নামাজ আদায় করতে। নামাজের আগে বয়ানে কোরবানির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য তুলে ধরেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। খুতবা শেষে মুসলিম উম্মাহ দেশ ও মানুষের মঙ্গল কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। মোনাজাতে মহান আল্লাহর নিকট দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও মানুষের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার শহীদ পরিবার ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের জন্য। দোয়া প্রার্থনা করা হয় দেশের উত্তরাঞ্চলসহ ২৭টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য। প্রার্থনায় প্রতিধ্বনিত হয়, ত্যাগ এবং ত্যাগই হলো মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্ট লাভের একমাত্র উপায়। আর কোরবানির মহান শিক্ষা সেটাই- ত্যাগ। এদিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শেষ হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের প্রধান ঈদ জামাত। সেখানে বিভিন্ন জেলা থেকে যাওয়া অসংখ্য মানুষ অংশ নেন। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ থেকেও মুসল্লিরা এসে শরিক হন এখানে। দেশ ও বিশ্বের সকল মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
×