ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারে জাতিসংঘের অধীনে রোহিঙ্গা অঞ্চল থাকা উচিত

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারে জাতিসংঘের অধীনে রোহিঙ্গা অঞ্চল থাকা উচিত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জাতিসংঘের অধীনে রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে আলাদা একটি অঞ্চল থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর যা ঘটছে, তা খুব খারাপ হচ্ছে। সোমবার ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসে সচিবালয়ে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে অর্থমন্ত্রী মুহিত এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন ওই বছরের আগস্ট থেকে প্রস্তুতি শুরু করবে। আমার বিশ্বাস, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। আগামী নির্বাচনে অর্থমন্ত্রীর আসন (সিলেট-০১) থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূর অংশ নেয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমি ঠিক বলতে পারি না। তবে কোন প্রচার-তো দেখি না। তিনি বলেন, দল চাইলে আমি নিজেও এই আসনে নির্বাচন করতে পারি। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত, কিছুটা ক্ষুব্ধ এবং আমরা এখন যেটা করছি বিশ্ব জনমতে ব্যাপকভাবে নাড়াচাড়া দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। আপনারা শুনেছেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সম্পর্কে বলেছেন আমরা মনে করি এটা এমন একটা বিষয়, যেখানে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের মুখে গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান। বাংলাদেশ সরকার তাদের ফেরত নেয়ার আহ্বান জানিয়ে এলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। এরই মধ্যে গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল নেমেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসাবে, গত ১১ দিনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই উত্তেজনার মধ্যে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার গত শুক্রবার তিন দফা বাংলাদেশের আকাশ সীমা লঙ্ঘন করলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এলিস ওয়েলস গত ৩০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে মিয়ানমারকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান। এ বিষয়ে মুহিত বলেন, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছি, রাখছিও। কিন্তু তাদের অত্যাচারী যে একটা মনোভাব এতদিন ধরে চলছে এবং যেখানে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় শান্তির জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত আউং সান সুচি তিনিও এটাকে সমর্থন করে যাচ্ছেন। অত্যন্ত ঘৃণিত এই পদক্ষেপ। আগামী নির্বাচন কেমন হবেÑ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিশ্বাস করে। অতীতে প্রতিটি নির্বাচনই তাই হয়েছে। আগামী নির্বাচনও তাই হবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ নিতে হবে। কারণ নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। এখনই দলের অবস্থা খুব ভাল যাচ্ছে না। বেগম খালেদা জিয়া তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার নির্বাচনের অভিজ্ঞতা একবারই শুধু ১৯৯৬ সালে ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, রাবিশ! বিএনপির এ স্বপ্ন রাবিশ! এদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আর কোন সুযোগ নেই। পরবর্তী নির্বাচন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই হবে। নির্বাচনে কোন ধরনের ঝামেলা হবে বলে আমি মনে করি না। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, তেমন বৃষ্টি না হওয়ার এবার স্বস্তিদায়ক ঈদ হয়েছে। যেটা ভাবা হচ্ছিল ঈদে বৃষ্টি হবে, কিন্তু বৃষ্টি না হওয়া সবাই ভালভাবে ঈদ উদযাপন করতে পেরেছে।
×