ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ২০

আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহত

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহত

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে কোরবানি পশু হাটের হাসিলের টাকার ভাগাভাগি ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে রুবেল মাহমুদ সুমন (৩০) নামে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত টেঁটাবিদ্ধসহ ১০ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে হতাহতের এ ঘটনা ঘটায়। সংঘর্ষের সময় কমপক্ষে চারটি বাড়িঘর অগ্নিসংযোগসহ ১০টি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত পুলিশ কনস্টেবল রুবেল মাহমুদ সুমন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে কর্মরত ছিল। সে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের আগের দিন শুক্রবার বিকেলে উপজেলার নদী পরিবেষ্টিত প্রত্যন্ত চরাঞ্চল কালাপাহাড়িয়ার রাধানগর এলাকায়। এদিকে রবিবার নিহতের বড় ভাই মোঃ কামাল হোসেন বাদী হয়ে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপনকে প্রধান আসামি করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। জানা গেছে, উপজেলার মেঘনা নদী পরিবেষ্টিত চরাঞ্চল কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের রাধানগর স্কুল মাঠে গরুর হাট বসায় আওয়ামী লীগ নেতা রুপ মিয়া, ফরিদ হোসেন, মহিউদ্দিনসহ কয়েজন নেতাকর্মী। হাটের হাসিল আদায়ের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে শুক্রবার বিকেলে রুপ মিয়া গ্রুপের সঙ্গে ফরিদ ও মহিউদ্দিন গ্রুপের লোকজনের সংঘষ বাঁধে। উভয় পক্ষের লোকজন টেঁটা, বল্লম, জুইত্তা, লোহার রড নিয়ে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে ১০ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ছুটিতে আসা পুলিশ কনস্টেবল রুবেল মাহমুদ সুমনসহ ২০ জন আহত হয়। গুরুতর আহত কনস্টেবল রুবেল মাহমুদ সুমনকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় আহত আরও ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল রুবেল মাহমুদ সুমনের মৃত্যুর ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ফরিদ, ওবায়দুল ইসলাম বাদল, মহিউদ্দিন ও লাল মিয়ার বাড়ির একাংশ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। সংঘর্ষের সময় গুরুতর আহত খোকন, হাসিমুন বেগম, জামির, রূপ মিয়া মেম্বার, ইসমাইল, আলমগীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। রবিবার নিহতের বড় ভাই মোঃ কামাল হোসেন বাদী হয়ে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপনকে প্রধান আসামি করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের বড় ভাই কামাল হোসেন মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গত শুক্রবার সকালে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ কনস্টেবল রুবেল মাহমুদ সুমন ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসে। ওইদিন দুপুর ২টায় কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপনের নেতৃত্বে ওবায়দুল ইসলাম বাদল, মহিউদ্দিন, ফরিদ মিয়াসহ অর্ধশত সন্ত্রাসী কালাপাহাড়িয়া গ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রূপ মিয়া মেম্বারের বাড়ি ঘেরাও করে হামলা চালায়। এতে পুলিশ কনস্টেবল রুবেল মাহমুদ সুমনের মাথার পিছন দিয়ে গুলি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে রুবেল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও টেঁটা, বল্লম দিয়ে আঘাত করে। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাদেরও দা, টেঁটা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রাখে। রুবেল মাহমুদ সুমনকে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায়। মিঠামইনে আ’লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহত ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, জেলার হাওড় অধ্যুষিত মিঠামইনে তুচ্ছ ঘটনায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আনিছ মিয়া নামে (২৮) নামে এক যুবক বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। এছাড়া পুলিশসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সামছুল (২৭), নূরুল হক (২৬) ও তাপসের (১৮) অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কলাপাড়া গ্রামে ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ হয়।
×