ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোলটেবিলে অভিমত

রোহিঙ্গা সঙ্কটের পেছনে পাকিস্তানী জঙ্গী ও আইএসআই

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা সঙ্কটের পেছনে পাকিস্তানী জঙ্গী ও আইএসআই

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কটের পেছনে পাকিস্তানী জঙ্গী ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। এছাড়া জাতিগতভাবে বিবেচনা না করে মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গা সঙ্কটকে বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তারা। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ভারত ও চীনের সহযোগিতা নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এই পরামর্শ দেন। ‘রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশ’Ñশীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ইনস্টিটউট অব কনফ্লিক্ট ল’ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আইক্যাডস)। এতে সভাপতিত্ব করেন আইক্যাডসের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির। বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন আইক্যাডসের নির্বাহী পরিচালক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশীদ, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী শাহরিয়ার কবির, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমান, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, ডিবিসি নিউজের সিইও মনঞ্জুরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমেনা মহসীন প্রমুখ। গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী শাহরিয়ার কবির বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। পাকিস্তানে রোহিঙ্গা জঙ্গীদের ট্রেনিংও দেয়া হয়। বৈঠকে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার পেছনে পাকিস্তানের জঙ্গী গোষ্ঠী এবং গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জড়িত। এছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের জন্য চীন, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি। সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, জাতিগতভাবে বিবেচনা না করে মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গাদের বিবেচনা করার বিষয়টি উঠে এসেছে আজকের আলোচনায়। কোফি আনান কমিশন রোহিঙ্গাদের নিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে তা বাস্তবায়নের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার জন্যও তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। প্রতিবেশী দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, শুধু মুখে মুখে মিষ্টি কথা বললে হবে না, মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আইক্যাডসের নির্বাহী পরিচালক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশীদ বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিক স্বীকৃতি এবং নাগরিক অধিকার নিয়ে অন্তত ইসলামিক দেশগুলোর সম্মেলন হওয়া উচিত। বাংলাদেশ এ সময়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটে আবর্তিত। এটি একটি জাতীয় ও মানবতার বিপর্যয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটা বাংলাদেশের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়, এখানে কূটনৈতিক উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টিকে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয় উল্লেখ করে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, একই সঙ্গে বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনেরও বিপর্যয়। তাই একে আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে মোকাবেলা করতে হবে। কারণ মিয়ানমার সেনাবাহিনী যা করছে সেটা গণহত্যা। তাই অবশ্যই মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তবে এ ক্ষেত্রে ভারত ও চীনকে পাশে পেতে হবে।
×